মিজোরামে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, নির্মীয়মান রেল ব্রিজ ভেঙে মৃত মালদার ২৩ পরিযায়ী শ্রমিক, ঘটনায় টুইটে দুঃখ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
মালদা;তনুজ জৈন;২৩আগস্ট: মিজোরামে ব্রিজ দুর্ঘটনায় মালদহের ২৩ জন শ্রমিকের মৃত্যুর খবর।গ্রামের বাড়িতে মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। ইতিমধ্যেই মিজোরাম সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার সকালে মিজোরামে আইজল থেকে ২১ কিলোমিটার দূরে আচমকাই নির্মীয়মাণ রেলব্রিজ ভেঙে পড়ে।
তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হয় কমপক্ষে ১৭ জনের। মৃতরা সকলেই শ্রমিক বলে জানা গিয়েছে। ধসে পড়া ব্রিজের তলায় আটকে পড়েন অনেকেই। সেই সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ৩৫-৪০ জন শ্রমিক।ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা ছিলই। মালদহ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর এই দুর্ঘটনায় মালদহের ২৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।মৃতদের মধ্যে ১৬ জন রতুয়ার পুখুরিয়া থানা এলাকার চৌদুয়ার গ্রামের,৫ জন ইংরেজবাজার থানার সাট্টারি এলাকার,১ জন গাজোল এবং ১ জন কালিয়াচক থানা এলাকার বাসিন্দা।মৃত্যুর খবর আসতেই শোকের আবহ জেলা জুড়ে। পুখুরিয়া থানা এলাকার চৌদুয়ার, কোকলামারি, কুতুবগঞ্জ, পরানপুর গ্রামে কান্নার রোল উঠেছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মালদহের রতুয়ার পুখুরিয়ার থানার এই চারটি গ্রাম থেকে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক একসাথে কাজে গিয়েছিলেন মিজোরামে।ওই ব্রিজেই কাজ করছিলেন তাঁরা।এখনো পাওয়া খবর পর্যন্ত তাদের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।এদিন মালদহে দুর্ঘটনার খবর পৌঁছতেই পুখুরিয়া থানা এলাকায় যান অতিরিক্ত জেলাশাসক।কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত শ্রমিকদের পরিবার। প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় টুইটে দুঃখপ্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।এলাকাবাসীর দাবি যাদের এখনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাদের আগে খোঁজ দিক প্রশাসন।যারা আহত রয়েছে তাদের যাতে সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়।আর যারা মারা গেছে তাদের মৃতদেহ গ্রামে ফেরানোর যাতে সঠিকভাবে ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরাও মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।
সৌদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সুলতান আলী জানান," আমাদের এখান থেকে ঈদের পর অনেকেই গেছিল কাজ করতে। আজ সকালে শুনলাম এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কথা। সব থেকে বেশি মারা গেছে আমাদের গ্রামের।"
সৌদিয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আমির উদ্দিন বলেন," আমাদের গ্রাম থেকেই প্রায় ১২ জন মারা গেছে। এরকম আছে একই পরিবারের ছয় জন মারা গেছে।ওদের মৃত দেহ আনার ব্যবস্থা করে দিক প্রশাসন। বাকিদের ও সঠিকভাবে খোঁজ দিক।
সিটুর মালদা জেলা সম্পাদক দিবজ্যোতি সিনহা বলেন," খুব মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। আমাদের নেতৃত্ব পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছে। আমরা শ্রমিকের পরিবারের পাশে রয়েছি।রাজ্যে কাজ নেই বলেই তো পেটের টানে গরিবদের বাইরে যেতে হচ্ছে।"
মালদা জেলা আইনটিটিইউসির সভাপতি শুভদীপ সান্যাল বলেন," শুনতে পাচ্ছি প্রায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে জেলায়। তার মধ্যে বেশিরভাগই এই গ্রামের। খুব দুঃখজনক ঘটনা। আমরা সব রকম ভাবেই পাশে রয়েছি।"
অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান," আমি জেলা শাসকের নির্দেশে এখানে এসেছি। আমাদের জেলাশাসক মিজোরামের ওই জায়গার জেলাশাসকের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছেন। সমস্ত পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।আহতদের সেখানকার স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা হচ্ছে। আপাতত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে।"