মালদা;০২মার্চ: পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী পরিবর্তন নিয়ে এবার চরমে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।মন্ত্রীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগের পর এবার পাল্টা প্রাক্তন বিরোধী দলনেত্রীর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনে তৃণমূলের ১১জন পঞ্চায়েত সদস্যের।কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজের অভিযোগ। আর এই অভিযোগের পর ফের মন্ত্রী এবং মন্ত্রীর ভাইকে বেলাগাম আক্রমণ করলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তথা ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি। তোলাবাজি সিন্ডিকেট থেকে শুরু করে একাধিক অভিযোগ।পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেকের দ্বারস্থ হওয়ার হুশিয়ারি।চরম অস্বস্তিতে শাসক শিবির।তীব্র কটাক্ষ বিরোধীদের।বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরেও যেন মন্ত্রীর গড়ে শিক্ষা নিচ্ছে না তৃণমূল।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভা। মন্ত্রীগোষ্ঠী এবং অপরগোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী পরিবর্তন নিয়ে। বর্তমানে এই পঞ্চায়েত রয়েছে কংগ্রেস-বিজেপি সিপিএম মহাজোটের দখলে। বারটি আসন নিয়ে বিরোধী পক্ষে রয়েছে রাজ্যের শাসকদল।বিরোধী দলনেত্রী ছিলেন কাশিমপুর বুথের পঞ্চায়েত সদস্য মন্দিরা দাস। কিন্তু তাকে সরিয়ে দিয়ে বিরোধী দলনেত্রী হন থানাপাড়া বুথের সদস্য বাসন্তী দাস।এই নিয়ে মন্দিরা দাস অভিযোগ করেন মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের ভাই তথা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমানের অঙ্গুলিলেহনে তাকে সরানো হয়েছে।কারণ জম্মু রহমান কাটমানি দাবি করলে তিনি দেননি।তার স্বামী তোষামোদি করেন নি। আরো অভিযোগ করেন জম্মু রহমান এলাকা জুড়ে সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। পুলিশ থেকে শুরু করে জমি বিভিন্ন কাজে টাকা তুলছে। মন্ত্রীর ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। তার জন্য দলের এত ভরাডুবি। সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেউ ইমেইল মারফত অভিযোগ জানান। পাল্টা এদিন মন্ত্রীর দলীয় কার্যালয়ে বসে ১১ জন সদস্য সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করেন এই পরিবর্তনে মন্ত্রী বা তার ভাইয়ের কোন ভূমিকা নেই। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যে। মন্দিরা দাস কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন। অন্যেরা কাজ পাচ্ছিল না।তাই তারা সকলে মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলেন পরিবর্তনের।কিন্তু এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্দিরা দাসের স্বামী তথা ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি পূজন দাসের দাবি মন্ত্রী এবং তার ভাই বাঁচার জন্য এই সব অভিযোগ করাচ্ছে। পরিবর্তনের জন্য ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কে মন্ত্রী ফোন করে ছিলেন।সেটা বিডিও নিজে বলেছেন।তার স্ত্রী মুখ খোলার পর মন্ত্রী এবং মন্ত্রীর ভাই লোক পাঠিয়ে তাকে বাড়ি থেকে তোলার চেষ্টা করে ছিল। চারিদিকে এরা দুর্নীতি করছে। মন্ত্রীর ভাই তাই নিজে জেলা পরিষদ হেরেছে। পঞ্চায়েত সমিতি হাতছাড়া হয়েছে। লোকসভায় ভরাডুবি হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা তুলছে বলে দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে।পুজনের আরো দাবি জম্মু রহমান বিভিন্ন অপকর্ম করছেন। যেটা দলের স্বার্থে তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলবেন না। নেত্রী এবং অভিষেক ব্যানার্জিকে লিখিত ভাবে জানাবেন। এই ঘটনা সামনে আসতেই বিজেপি এবং কংগ্রেসের দাবি তৃণমূলের সর্বস্তর দুর্নীতিগ্রস্ত। এতদিন তারা যে অভিযোগ করেছেন। সেটা তৃণমূলের এক ব্যক্তি এখন অপর ব্যক্তির বিরুদ্ধে করছেন। প্রকাশ্যে এসছে শাসকের অন্দরের কোন্দল। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।