মালদা;তনুজ জৈন;০৪ডিসেম্বর: সরকারি সেচ দপ্তরের ছয় বিঘা জমি প্রায় দের কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে গেল রেজিস্ট্রি।কিন্তু রেকর্ডের জন্য ভূমি দপ্তরে আবেদন করার পরেই দানা বাঁধে সন্দেহ। ভূমি দপ্তরের প্রতিনিধিরা সরজমিনে যেতেই জমি কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস। বাতিল করা হলো আবেদন।সরকারি জমি অবৈধ ভাবে বিক্রি হয়ে যাওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তার পরেই এই ঘটনা সামনে আসার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অন্যদিকে যে ব্যক্তি কলকাতার আরেক ব্যক্তির কাছ থেকে সরকারি এই জমি কিনে নিয়েছেন। তার হুঁশিয়ারি তিনি হাইকোর্টে যাবেন। সমগ্র ঘটনা সামনে আসার পর তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছে বিজেপি। সাফাই তৃণমূলের।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল সংলগ্ন রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তরের মহানন্দা এনভাইরনমেন্টের অন্তর্গত প্রায় ১৩ বিঘা জমি রয়েছে। দপ্তরের পক্ষ থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে সেই জমি। সেখান থেকেই ছয় বিঘা জমি দক্ষিণ ২৪ পরগনার দীপেন্দ্র কুমার মিশ্র নামে এক ব্যক্তি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কাউয়ামারী গ্রামের সিরাজুল হকের কাছে প্রায় দের কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন। সেই জমির যে ওয়ারিশ সার্টিফিকেট রয়েছে সেখানে আলিপুর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর রয়েছে। যে টি রায়তি সম্পত্তি বলে উল্লেখ রয়েছে। সেই কাগজের ভিত্তিতে আবার তুলসীহাটা সাব রেজিস্টার অফিসে সরকারি এই জমি সিরাজুল হকের নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হয়। তারপরে সিরাজুল হক যখন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন।তখন বেশ কিছু কারণে সন্দেহ দানা বাঁধে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কর্মীদের মনে। তারা খতিয়ে দেখার জন্য সরজমিনে যান। মাপযোগ করেন।তারপরেই কার্যত চক্ষুচড়ক গাছ। দেখা যায় বিক্রি হয়ে গেছে সরকারি জমি। সাথে সাথে বাতিল করা হয় রেকর্ড এর আবেদন।পাশাপাশি এই ঘটনায় সরকারি দুই দপ্তর সাব রেজিস্টার এবং ভূমি দপ্তরের মধ্যে একটা সংঘাত সামনে এসেছে। সাব রেজিস্টারের দাবি তিনি ওয়ারিশ সার্টিফিকেট দেখে রেজিস্ট্রি করে দিয়ে ছিলেন। যেখানে আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের স্বাক্ষর ছিল। আলিয়া ভট্টাচার্যের নামে ছিল রায়তি এই সম্পত্তি। অন্যদিকে যিনি জমি কিনেছেন তার দাবি তাকে রেকর্ড করে না দিলে লিখিত দিতে হবে রেকর্ড না করে দেওয়ার কারণ। তিনি সমস্ত কাগজপত্র দেখে এই জমি কিনেছেন। পরবর্তীতে না তো তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর বার্তার পরে এই জমি কেলেঙ্কারি সামনে আসতে ফের প্রশ্ন উঠেছে অসাধু চক্র নিয়ে। এদিকে এই ভাবে দপ্তরের জমি বিক্রি হয়ে যাওয়া নিয়ে কিছুই টের পাননি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা।কি ভাবে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার সরকারি জমি সুদূর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার এক ব্যক্তি বিক্রি করতে পারল। তবে কি বড় কোন চক্র রয়েছে এর পেছনে। উঠেছে প্রশ্ন? বিজেপির অভিযোগ বহু জায়গায় সরকারি জমি তৃণমূলের মদতে বিক্রি হচ্ছে। পাল্টা তৃণমূলের দাবি মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসন সক্রিয় রয়েছে। তাই কোথাও দুর্নীতি হলেই সামনে আসছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।