সুশোভন সিংহ:- শ্রীলংকা অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার পর অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়। সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কায় দশম প্রেসিডেন্ট হিসাবে কুর্সিতে বসলেন জনতা বিমুক্তি পেরামুনা বা জেভিপির পলিটব্যুরোর সদস্য দিশানায়েকে। ভারত-বিরোধী জনতা বিমুক্তি পেরামুনা দলের এই পলিটব্যুরো সদস্যকে চিনের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এর ফলে দেশটির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে চিন্তিত নয়াদিল্লি। ইতিহাসগত ভাবে তাঁকে ভারত-বিরোধী ও চিনপন্থী বলেই মনে করা হয়। ফলে তাঁর জয়ে ভ্রু কুঁচকেছেন নয়াদিল্লির কূটনীতিকদের একাংশ।
চীনপন্থী এই বাম দলটি শ্রীলঙ্কায় প্রতিষ্ঠাতা করেছিলেন রোহানা উইজেভেরা। এই দলের মূল এজেন্ডা চীনের প্রতি ভালোবাসা এবং ভারত বিদ্বেষী।১৯৮০-র দশকে ‘ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ’-এর কথা বলে বলে দ্বীপরাষ্ট্রের আমজনতাকে উস্কানি দেন তিনি। নয়াদিল্লিকে শ্রীলঙ্কার অন্যতম বড় শত্রু বলেও উল্লেখ করেছিলেন জেভিপির প্রতিষ্ঠাতা। সূত্রের খবর অনুসারে, অনুরাকুমার দিশানায়েকের দল দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভারত বিদ্বেষী চিন্তাভাবনার ফসল হিসেবে এই জয় পেয়েছে। যদিও দেশটির গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে গিয়ে ভারতের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখার কথা বলেছেন দ্বীপপুঞ্জের বর্তমান প্রধান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নয়াদিল্লি এসেছিলেন তিনি। ওই সময়ে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন দিশানায়েকে।
রাজনৈতিক মতাদর্শ ও ভোটের প্রচারে ভারত বিদ্বেষী মনোভাব থাকলেও কুর্সিতে বসার পর প্রবল ভারত বিরোধিতার রাস্তায় না-ও হাঁটতে পারেন শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যে চীনের সাথে বহু আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং শর্তে রাজি হয়েছে শ্রীলংকা। এবার দেশটির প্রধান আসনে চীনপন্থী,এর ফলে চিনের সঙ্গে একাধিক চুক্তি করতে পারেন তিনি। যদিও মুখে ভারত-চিন ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় শ্রীলঙ্কা কোনও শক্তির অধীনস্থ হবে না বলেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন দিশানায়েকে। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর রয়েছে চিনের দখলে। আগামী দিনে সেখানে বেজিংয়ের পাঠানো যুদ্ধজাহাজ বা গুপ্তচর জাহাজের আনাগোনা বাড়বে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক মহল। এর ফলে সার্বভৌমত্বের দিক থেকে নয়াদিল্লি খানিকটা চাপে থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।