আপনার নিউজ ডেক্স:- রাজ্য যখন আরজি কর ঘটনায় উত্তাল। আন্দোলনের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। ঠিক সেই সময় বাংলার মহিলা নেত্রীরা চুপ থাকায় সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে লাপাতা লেডিস হোডিং। ১৪ই আগস্ট মধ্যরাতে যখন গোটা বাংলার মা-বোনেরা রাস্তায় প্রতিবাদ করছে ঠিক সেই সময় দেখা মিলেন বাংলার মহিলা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের। কয়েকদিন ধরেই সমাজমাধ্যমে খোঁজ পড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে অভিনেত্রী-সাংসদদের। সেই তালিকায় ছিলেন সায়নী ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, জুন মাল্য, শতাব্দী রায়রা। কোথাও কোথাও পোস্টার পড়েছিল ‘লাপাতা লেডিস’ নামে। বিস্তর সমালোচনা হয়। রাজ্যে জুড়ে যখন এমন প্রতিবাদ চলছে তখনও কেন চুপ তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাংসদেরা। অবশেষে নীরবতা ভেঙে প্রকাশ্যে এলেন হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অবশেষে গতকাল স্বাধীনতা দিবসের দিন একটি সামাজিক ভিডিও বার্তায় আরজি কর কাণ্ড নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন দিদি নাম্বার ১ খ্যাত সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন সত্যিই কি নারীরা স্বাধীন? তাঁরা কি স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছেন? ভিডিয়োয় সারা ভারতের মহিলাদের কথাই তুলে ধরলেন রচনা। তিনি বললেন, ‘‘সারা ভারতে মহিলারা কি স্বাধীন ভাবে ঘুরতে পারছে? উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে মণিপুর একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। আমরা মেয়েরা কবে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াব। কলকাতা শহরে আরজি করের এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা রাস্তায় নেমেছি। আওয়াজ তুলেছি। আমিও আপনাদের সঙ্গেই আছি।’’মহিলারা যে ভাবে পথে নেমেছেন তা ভারতবর্ষে আগে কোথাও কখনও হয়নি বলেই জানিয়েছেন রচনা। পাশাপাশি সব আন্দোলনকারী সকল মহিলাদের কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি।
কথা বলতে বলতে চোখে জল সাংসদের। তাঁর নিজের জীবনটা স্বাচ্ছন্দ্যের হলেও সমাজের একটা বড় অংশের মেয়েরা যে ভাবে যাতায়াত করেন সেই নিয়ে চিন্তিত তিনি। অশ্রুসজল চোখে তিনি বলেন, ‘‘রাতে কাজ সেরে আমি গাড়ি করে বাড়ি ফিরি। তবে বহু মেয়ে ট্রেনে ঝুলতে-ঝুলতে ফেরে, কেউ বাসে, আবার কেউ ফেরে আটোতে। অনেকে অনেক কষ্ট করেন। আমি একজন বোন, একজনের মেয়ে। পুরুষ আমাকে সম্মান করবে, পুরুষ বিপদ পড়লে সাহায্য করবে। কিন্তু পুরুষের জাত আমাকে ছিঁড়ে খাবে, আমি চিৎকার করব কেউ শুনবে না!’’ এর পাশাপাশি মৃতা চিকিৎসকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘‘যতক্ষণ না মৃতা চিকিৎসক সুবিচার পাচ্ছেন আপনারা আওয়াজ তুলবেন। ওঁর বাবা–মা যাতে সুবিচার পায়।, দোষী যাতে শাস্তি পায়। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে।’’