সুশোভন সিংহ:- ইতিমধ্যেই এআইসিসি-র পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা গুলাম আহমেদ মীর সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বৈঠকের মাধ্যমে নতুন সভাপতি খোঁজ চালাচ্ছে কংগ্রেস। আর এই আবহে নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে চা চক্রে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "কেন্দ্রে বিজেপি-কে হটাতে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ যাতে ঐক্যবদ্ধ থাকে, সে জন্য তৃণমূল কংগ্রেস সক্রিয় থাকবে, তবে তা কোনও দলের (কংগ্রেসের) রাবার স্ট্যাম্প হয়ে নয়",।
২০১১ সালে কংগ্রেস এবং তৃণমূল যখন ঐক্যবদ্ধভাবে ৩৪ বছরে বামফ্রন্ট শাসন কে বাংলা থেকে রাজনৈতিকভাবে উপড়ে ফেলেছিল সময় থেকেই অধীরের সাথে মমতার সম্পর্ক খুব একটা সুমধুর ছিল না। পরবর্তী সেই রাজনৈতিক সম্পর্কে আরো ফাটল দক্ষ করা গেছে। বঙ্গের রাজনীতিতে একদা প্রতিপক্ষ বামফ্রন্টের সাথে হাত মিলিয়ে তৃণমূলের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছিল অধীরের নেতৃত্বে বঙ্গ কংগ্রেস। তবে কংগ্রেসের একাংশে নেতৃত্ব অধিক মমতা বিরোধিতা কোন কালেই পছন্দ করেনি। তবে মমতার বিরোধীতায় অধীর রঞ্জন ছিল বঙ্গ কংগ্রেসের একাই একশ।
বর্তমান সময়ে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে সংঘাতের রাজনীতি চলেছে তৃণমূলের। অন্য দিকে কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’র সবচেয়ে বড় শরিক কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিকে কী ভাবে দেখেন? অভিষেক বলেন, “অন্য সব জোট শরিকেরা কোনও না কোনও রাজ্যে কংগ্রেসের শরিক। একমাত্র আমরা কংগ্রেস, বিজেপি এবং বাম, এই তিন শক্তির সঙ্গেই লড়াই করেছি। কংগ্রেসকে বারবার জোটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক বাস্তবতা মেনে আসন (দু’টি) দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছি। কংগ্রেস তা গ্রাহ্য করেনি। তবে কেন্দ্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে বিজেপিকে হারানোর জন্য লড়াই আরও জোরদার করব।”
তবে একগুয়ে মমতা বিরোধীতার ফল এই লোকসভায় হাতেনাতে পেয়েছেন পাঁচবারের সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বারংবার বাধা সত্ত্বেও প্রকাশ্য এবং সংবাদ মাধ্যমে মমতা বিরোধিতা করতে ভয় পাননি অধীর। শেষমেষ নিজের কেন্দ্রে রাজনীতিতে আনকোরা ইউসুফ পাঠানের কাছে হেরে যান অধীর। এর পাশাপাশি এই কেন্দ্রে তিনি নেমে আসেন তৃতীয় স্থানে। এরপরই অভিমানী অধীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন বলে অনুমান রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
বঙ্গে কংগ্রেসের সাথে তৃণমূলের আলোচনার ক্ষেত্রে অভিষেক জানান, “ত্রিপুরা হোক বা গোয়া, আমরা এমন জায়গায় দলের সম্প্রসারণ করতে গিয়েছি যেখানে বিজেপি শক্তিশালী, কংগ্রেস নয়। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক দিন আগেই সূত্র দিয়েছিলেন, যে বিরোধী দল যে রাজ্যে শক্তিশালী, তার পিছনে দাঁড়াক অন্যান্য বিরোধী দলেরা। সেই হিসাবে আমরা কোনও রাজ্যে গিয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করার কথা ভাবিনি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে আমাদের জোট প্রস্তাব কংগ্রেসের মানা উচিত ছিল।”