আপনার নিউজ ডেক্স:- ছাত্র আন্দোলনের জেরে বাংলাদেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে হাসিনার আওয়ামী লীগ। বর্তমানে দেশটির ক্ষমতায় অন্তর্বর্তী সরকার। তবে বাংলাদেশে পরিবহনে চাঁদাবাজিতে কোন পরিবর্তন আসেনি। আগে পরিবহনে চাঁদাবাজি করত আওয়ামী লীগ এখন তা করছে বিএনপি। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে প্রকাশিত তথ্য। বছরে অন্তত ১ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা চাঁদা ওঠে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশের পরিবহন খাত থেকে মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নামে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার চাঁদা তোলা হয়। এর মধ্যে প্রতিটি বাস-ট্রাক থেকে প্রতিদিন প্রকাশ্যে তোলা হয় ৭০ টাকা। ‘গেটপাস বা জিপি’ কিংবা সমিতির সদস্য ফি—এ জাতীয় নানা অজুহাতে দৈনিক, মাসিক ও এককালীন আরও বিপুল টাকা চাঁদা তোলা হয়। সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক খাতের এ ব্যাপক চাঁদাবাজিরও হাতবদল হয়ে গেল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ছাত্র আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর ১৩ আগস্ট কার্যালয়টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন বিএনপিপন্থী পরিবহন নেতারা। রাজধানীর ইস্কাটনে বহুতল ভবন ইউনিক হাইটসের চতুর্থ তলায় ঢাকা সড়ক পরিবহন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যালয়টি বেশ সুসজ্জিত ও সুপরিসর। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এখান থেকেই দেশের পরিবহন খাত নিয়ন্ত্রণ করা হতো। সরকার পতনের পরে আওয়ামী লীগের চাঁদাবাজ শ্রমিক নেতা গুলো আত্মগোপন করেছে। আর অন্যদিকে এর সুযোগ নিয়ে নিয়েছে বিএনপি। ১০ আগস্ট কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন পরিবহন নেতা মিছিল নিয়ে এসে ইউনিক হাইটসের কার্যালয়ের তালা ভাঙেন। এরপর ১৩ আগস্ট কার্যালয়টি দখলে নেন তাঁরা। এর পরদিন সাইফুলের নেতৃত্বে ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিও ঘোষণা করা হয়।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুসারে, সাইফুল ইসলাম আগের দুই দফা বিএনপির শাসনামলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। দুবারই তাঁর সভাপতি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এবারও মির্জা আব্বাসই তাঁদের পেছনে রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সাইফুলের বাড়ি কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে। তাঁর পরিবহন কোম্পানির নাম ইলিয়টগঞ্জ এক্সপ্রেস। আর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ঢাকা পরিবহন নামে মির্জা আব্বাসের বাস চলাচল করত।
বাংলাদেশের বৈষম্যমূলক ছাত্র আন্দোলনের পেছনে জামাত এবং বিএনপি'র মদত রয়েছে বলে অভিযোগ ছিল দেশ এবং বিদেশের একাংশের। জামাত এবং বিএনপির সুকৌশলে ছাত্রদের ঢাল করে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বেশিরভাগ উপদেষ্টার দেশ চালানোর অভিজ্ঞতা একেবারেই নগণ্য। এর সুযোগ গোটা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিতে চলেছে বিএনপি এবং জামাত তা প্রথম আলোর এই প্রতিবেদন নতুন করে এই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।