সুশোভন সিংহ ; আপনার নিউজ :- অবশেষে কি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভবিষ্যৎবাণী ফলতে চলছে? উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো হবে যোগী কে। লোকসভা ভোট চলাকালীন ২১ মে কেজরিওয়াল এই ভবিষ্যদ্বাণীই করেছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, বেশ কয়েকবার ভণিতা না করেই বলেছিলেন, নরেন্দ্র মোদি ফের ক্ষমতায় এলে দুই মাসের মধ্যেই যোগী আদিত্যনাথকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেবেন। বসাবেন এমন একজনকে, যিনি হবেন তাঁদের একান্ত অনুগত। ‘ইয়েস ম্যান’। কেন তা করবেন, সেই ব্যাখ্যাও কেজরিওয়াল দিয়েছিলেন । বলেছিলেন, মোদি চান অমিত শাহকে উত্তরাধিকার করে যেতে। যোগী সেই লক্ষ্য পূরণের পথের কাঁটা।
যোগীর নেতৃত্বে লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির প্রত্যাশা মত আসন জিততে পারেনি। অন্যদিকে বিরোধীরা লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির থেকে অনেকটা এগিয়ে। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর দুমাসও কাটেনি, বিজেপির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এই সম্ভাবনা নিয়েই গমগম করছে! দুই শিবিরে ভাগ হয়ে গেছে উত্তর প্রদেশ বিজেপি। একদিকে রয়েছেন গেরুয়াধারী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, অন্যদিকে মোদি–শাহ ঘনিষ্ঠ উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য। দলীয় কোন্দল এমন সময়ে তুঙ্গে উঠেছে, যখন রাজ্যের ১০ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে যৌথভাবে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস।
উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত যোগীর অত্যাধিক ঔদ্ধত্য, সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থের জন্য বুলডোজার চালানো সঠিকভাবে মেনে নিতে পারেনি উত্তরপ্রদেশে সাধারণ জনগণ। কোন দেশ কিংবা রাষ্ট্র কেবলমাত্র ধর্মের উপরেই ভিত্তি করে চলে না। অন্যদিকে যোগী শিবির মনে করছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব খারাপ ফলের জন্য পুরোপুরি তাঁকে দায়ী করছে, যাতে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া সহজ হয়। এই মহলের মতে, প্রধানমন্ত্রী মোদি চান না যোগী আদিত্যনাথ ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার হয়ে উঠুন। অমিত শাহর পথের কাঁটা সরাতে তাই এখন থেকেই তৎপরতা শুরু হয়েছে।
লোকসভা ভোটে রাজ্যের মোট ৮০টি আসনের মধ্যে ৩৭টি জেতার পর অখিলেশের নজরে এখন লক্ষ্ণৌয়ের তখত। গত বুধবার তিনি বলেন, ‘বিজেপিতে শুরু হয়ে গেছে কুর্সি দখলের লড়াই। প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। যে দল এত দিন ধরে বিরোধীদের দল ভাঙিয়ে রাজনীতি করে চলেছে, আজ তাদের ঘরই ভাঙনের মুখে।’ ইতিমধ্যেই অখিলের যাদবের পক্ষ থেকে বিজেপির বিভাগের উদ্দেশ্যে বার্তা দেওয়া হয়েছে।
ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে উত্তর প্রদেশ দখল করেছিল বিজেপি। আজ সেই একই কারণে উত্তরপ্রদেশ থেকে ক্ষমতা হারাতে পারে বিজেপি। 'ধর্ম থেকে কর্ম বড়' এখন এই নীতিতে উত্তরপ্রদেশে এগোতে চাইছে বিজেপি।