সুশোভন সিংহ ; আপনার নিউজ :- সরকারি চাকরি থেকে শুরু করে নানান সরকারি পরিষেবায় সংরক্ষণের প্রতিবাদে ছাত্র আন্দোলনে জেরে উত্তাল বাংলাদেশ। দেশটির গণমাধ্যমের হিসাব অনুসারে রক্তক্ষয়ী এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ৩১০ জন। যদিও সরকারি হিসাব অনুসারে তা ১১৪ জন, মৃতের তালিকায় অধিকাংশই ছাত্র যুব বলে জানা গেছে। তবে আজ দেশটির সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে হাই কোর্টের রায় খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। কোটা সংস্কারের পক্ষেই গিয়েছে আদালতের রায়। কী ভাবে সংরক্ষণ ব্যবস্থার সংস্কার করা হবে, তারও রূপরেখা তৈরি করে দিয়েছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। বলা হয়েছে, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কেবল সাত শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। বাকি ৯৩ শতাংশ আসনেই নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। একই সঙ্গে কোটা সংস্কারের দাবিতে এত দিন যে ছাত্রছাত্রীরা বাংলাদেশ জুড়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরতে বলেছে আদালত।
দেশটির সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে, সে দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানেরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুবিধা পাবেন। তবে আগের মতো ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ আর পাচ্ছেন না তাঁরা। ৩০ শতাংশ থেকে কমে মুক্তিযোদ্ধা-সংরক্ষণ করা হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ। অর্থাৎ, এখন থেকে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কেবল পাঁচ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য। এই রায়ের ফলে কার্যত আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের জয় বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ৭ শতাংশের মধ্যে বাকি ২ শতাংশ সংরক্ষণ থাকছে অন্যান্য শ্রেণির জন্য। অনগ্রসর শ্রেণি পাচ্ছে এক শতাংশ কোটা। এ ছাড়া বাকি ১ শতাংশ কোটার সুবিধা পাবেন প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকেরা।
অন্যদিকে এই আন্দোলন দমাতে এবং দেশে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আরও কড়া পথে হাঁটল শেখা হাসিনার সরকার। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, সারা বাংলাদেশে ‘শুট অন সাইট’ জারি করেছে সরকার। অর্থাৎ দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হল সেনাবাহিনীকে। কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে যে আন্দোলন চলছে, তাতে শনিবার পর্যন্ত ১১৪ জন মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। বিবিসি নিউজ় বাংলা দাবি করেছে, শনিবার সে দেশে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মী।