মালদা;তনুজ জৈন;১৬অক্টোবর: কয়েক বছর ধরে চলে আসা কালীপুজো উপলক্ষে অশ্লীল চটুল নাচের আসর এবং জুয়ার আসর বন্ধ করা নিয়ে কালী পূজোর বৈঠকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিবাদ তৃণমূল নেতার। সেই বিবাদ থেকে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি। এক যুবককে লোহার পাঞ্জা দিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ তৃণমূল নেতা এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। গুরুতর আশঙ্কাজনক অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে ওই যুবক। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবীতে বিক্ষোভ এলাকার মহিলাদের। অভিযুক্তরা এক প্রভাবশালী তৃণমূল ছাত্র-নেতার অনুগামী বলে সূত্রের খবর। সেই ছাত্র-নেতার নেতৃত্বেই চলতো এই চটুল নাচ এবং জুয়া। এমনকি সেই ছাত্র-নেতার দাদা পেশায় গ্রাম পুলিশ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তার উপস্থিতিতেই হয়েছে মারধর। সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই তৃণমূলকে এক হাত নিল বিজেপি। পাল্টা সাফাই তৃণমূলের।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত মহেন্দ্রপুর এলাকার ঘটনা।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে মহেন্দ্রপুর কালী মন্দিরে কালীপূজো উপলক্ষে এলাকার কয়েকটি পাড়ার মানুষ একসঙ্গে পূজোর আয়োজন করে। বিগত তিন চার বছর ধরে তৃণমূলের ছাত্র-নেতা বিমান ঝা'র নেতৃত্বে সেখানে কালীপূজো উপলক্ষে বসছে অশ্লীল চটুল নাচের আসর।বাজছে অশ্লীল গান। চলছে দেদার মদের আসর এবং জুয়া খেলা। যার ফলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার সংস্কৃতি। নিরাপত্তার অভাব বোধ করছে মহিলারা। নষ্ট হচ্ছে পুজোর সংস্কৃতি। এই কারণেই এবার এলাকার স্বর্ণকার পাড়ার পক্ষ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় আগাম অভিযোগ দায়ের করা হয় যাতে এই আসর কালী পুজোতে কোন ভাবেই না বসে। এই নিয়েই চলছিল কালীমন্দিরে বৈঠক। প্রত্যেকেই সহমত প্রকাশ করে ছিলেন এই ধরনের আসর বন্ধ করার জন্য।সেই সময় হঠাৎ করে তৃণমূল নেতা অবিনাশ দাস এবং তার ভাই প্রিন্স দাস হুমকি দিতে থাকে যারা থানায় অভিযোগ করেছে তাদের।তারা দাবি করে চটুল নাচের আসর বসতে দিতেই হবে। প্রতিবাদী এলাকাবাসীদের প্রাণে মারার হুমকি দেয়।সেই সময় প্রীতম সাহা নামে এক যুবক প্রতিবাদ করলে তার ওপর চড়াও হয় দুই অভিযুক্ত। লোহার পাঞ্জা দিয়ে আঘাত করা হয় মুখে এবং মাথায়। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন প্রীতম।ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুনের চেষ্টাও করা হয়। উপস্থিত এলাকাবাসী কোনোক্রমে তাকে প্রাণে রক্ষা করে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে চাচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রেফার করা হয়।
প্রীতমের পরিবারের পক্ষ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।জানা গেছে এই অবিনাশ এবং প্রিন্স তৃণমূল ছাত্রনেতা বিমান ঝার মদতেই এই ভাবে এলাকায় দাদাগিরি করেন। অভিযুক্ত গুণধর তৃণমূল নেতা অবিনাশ দুই মাস আগেই হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নার্স এবং চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনাতেও জেল খেটে ছিলেন। এদিকে বিমান ঝার দাদা যিনি পেশায় গ্রাম পুলিশ। তিনি মারধরের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রশ্নের মুখে গ্রাম পুলিশের ভূমিকাও।যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি যদি কেউ দোষ করে থাকে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। দল কোনো ভাবেই পাশে দাঁড়াবে না। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূল এই ভাবেই রাজ্যে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। অপরাধমূলক পথে নিজেদের আর্থিক উপার্জন করছে। সমগ্র ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।