বাংলাদেশ:- আজ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মেহেরপুরের তরুণ কবি ও আবৃত্তি শিল্পী তারিন সুলতানা জুসি (২৭) আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের কাজী নজরুল ইসলাম লেন (কোর্টপাড়া) এলাকার একটি বাসার দ্বিতীয় তলায় গলায় রশি পেঁচিয়ে ওই নারী আত্মহত্যা করেন।
মারা যাওয়া তারিনের স্বামীর নাম নবীন হোসেন।
মৃত্যুর আগে তারিন নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমার শেষ ইচ্ছা আমার মৃত্যুর পরে আমার মুখ আমার মা-বাবা এবং আমার হাসবেন্ডকে না দেখানো হোক। আমার লাশ আমার মা-বাবার বাড়িতে না নিয়ে আমার দাদি বাড়ি নিয়ে শেষ কাজটুকু করে আমার দাদির কাছে আমাকে কবর দেয়া হোক।’ এর আগে মা ও মেয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে আরও দুটি ফেসবুক পোষ্ট দেন তারিন।
তারিনের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, আড়াই বছর আগে নবীন হোসেনের সঙ্গে তারিনের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের এক বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে। শহরের কোর্টপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তারা। তারিন একজন আত্মনির্ভরশীল মেয়ে ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি চিত্রাংকনসহ বিভিন্ন বিষয়ে তার পারদর্শীতা ছিল। ‘তাইয়িবা’ নামে একটি অনলাইন বুটিক ফ্যাশন হাউজ চালাতেন তিনি। ঘটনার সময় তারিন ও তার মেয়ে বাড়িতে একা ছিলেন। দুপুরের কোনো এক সময় তারিন নিজ ঘরের সিলিংয়ের সঙ্গে দড়ি বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হতাশায় ওই নারী আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তদন্ত চলছে।
তারিন সুলতানা জুসির মা বাবার দাবি তার স্বামী নবিনের শারীরিক নির্যাতনে কুষ্টিয়ার বাড়িতে মারা যায়। আত্মহত্যা বলে চালাতে গলায় ফাঁস দিয়ে তাকে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
তারিন সুলতানা জুসির ‘চারু তারিন’ নামে তার কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি একটি উপন্যাস লেখার কাজ প্রায় শেষ করেছেন তিনি। তিনি মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমীর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেছেন এবং অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেছেন। পড়াশুন করেছেন গাংনী ও মেহেরপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিবিএ পাশ করেছেন।