মন্ত্রীর নেতৃত্বে কিষাণ সেলের বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে পরের দিন যুবর বৈঠকে বড় সংখ্যায় যুব কর্মীদের নিয়ে শক্তি প্রদর্শন দাপুটে জেলা পরিষদ সদস্যের, পাল্টা চেষ্টা মন্ত্রী ঘনিষ্ঠদেরও, দ্বন্দ্বের আবহে মঞ্চ থেকে ঐক্যের কড়া বার্তা জেলা যুব তৃণমূল সভাপতির, খোঁচা বিজেপির
মালদা;তনুজ জৈন;১৪জুলাই: এ বলে আমায় দেখ।ও বলে আমায়।একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠক নিয়ে শাসকের অন্দরেই যেন শক্তি প্রদর্শনের খেলা।যখন কিষাণ সেলের বৈঠকে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রীর শক্তি প্রদর্শন। তখন সেই বৈঠকে উপস্থিত না থেকে আবার পরের দিন যুবর প্রস্তুতি বৈঠক এবং মিছিলে দাপুটে জেলা পরিষদ সদস্য এবং তার ঘনিষ্ঠদের নেতৃত্বে জনজোয়ার। যদিও কলকাতা যাওয়ার কারণে মন্ত্রী না থাকলেও জেলার যুব সভাপতিকে স্বাগত জানাতে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠদেরও সক্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। যদিও তুলনামূলক প্রতিযোগিতায় এদিন যেন তারা কিছুটা ফিকে। এই দ্বন্দ্বের মাঝেই মঞ্চ থেকে বিধানসভার টিকিট সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কড়া বার্তা নব-নির্বাচিত জেলা যুব তৃণমূল সভাপতির।স্মরণ করিয়ে দিলেন দল না থাকলে নেতাও থাকবে না। যদিও সংবাদ মাধ্যমের সামনে দল ঐক্যবদ্ধ আছে বলেই সাফাই।কটাক্ষের সুর বিজেপির গলায়। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
আগামী বছর বিধানসভার প্রাক্কালে এখন থেকেই মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার রাজনীতির পারদ ঊর্ধ্বমুখি হচ্ছে। নেপথ্য তৃণমূলের অন্দরের সংঘাত। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন এবং দাপুটে জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খানের ঘনিষ্ঠদের আলাদা করে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আয়োজনকে কেন্দ্র করে যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়ে ছিল। সম্প্রতি দলীয় বৈঠকে নাম না করে পাশে বসিয়ে বুলবুলকে নিশানা করে এই সংঘাতে সরাসরি জড়িয়ে ছিলেন মন্ত্রী। সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (এ) ব্লক যুব তৃণমূল এবং হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একুশে জুলাই নিয়ে একটি প্রস্তুতি বৈঠকের আয়োজন করা হয়।যেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (এ) ব্লক তৃণমূল সভাপতি জিয়াউর রহমান, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (বি) ব্লক তৃণমূল সভাপতি মর্জিনা খাতুন, জেলা পরিষদের দুই কর্মাধ্যক্ষ রিয়াজুল করিম বক্সি, রবিউল ইসলাম, জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান প্রমুখ। হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক মিটিং হলে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এদিন প্রথমে প্রসেনজিৎকে স্বাগত জানাতে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (এ) ব্লক যুব তৃণমূলের আহ্বায়ক পূজন দাসের নেতৃত্বে মেগা বাইক মিছিল হয়। হুড খোলা গাড়িতে সেই মিছিলে ছিলেন প্রসেনজিৎ। হরিশ্চন্দ্রপুর বাড়দুয়ারী স্ট্যান্ড থেকে বিশাল সংখ্যায় যুব কর্মীদের নিয়ে সেই মিছিলে যোগ দেন জেলা পরিষদ সদস্য বুলবুল খান। অন্যদিকে মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ যুব নেতারাও মিছিল করে। তবে বুলবুল পুজনদের সঙ্গে তারা পাল্লা দিয়ে উঠতে পারে নি।
এই ছবি দেখে মঞ্চ থেকে পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ প্রসেনজিতের বার্তা,"দল না থাকলে কোন নেতা থাকবে না।তাই আগে কোন নেতা বা গোষ্ঠী না আগে দলের পতাকা। বিধানসভাতে দল যাকে প্রতীক দেবে সকলে মিলে তাকে জেতাতে হবে।" রাজনৈতিক মহলের মতে হরিশ্চন্দ্রপুর অন্তর্দ্বন্দ্বের আবহে যুব সভাপতির এই বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। অন্যদিকে গতকাল মালদা জেলা কিষান ক্ষেত মজদুর ইউনিয়নের সম্মেলন এই হরিশ্চন্দ্রপুরেই হয়।মূলত মন্ত্রী তাজমুলের নেতৃত্বে সেই সম্মেলন হয়। যেখানে বুলবুল অনুপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও দুই ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান এবং মর্জিনা খাতুনও ছিলেন না। যদিও তাদের দুজনকেও এদিন দেখা যায়। অনুপস্থিত থাকা নিয়ে তাদের সাফাই,"তারা কেউ এলাকাতে ছিলেন না।" বারবার বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে তৃণমূলের অন্দরে মন্ত্রী গোষ্ঠী বনাম অপর গোষ্ঠীর মধ্যে চাপা একটা দ্বন্দ্ব সামনে আসছে।যেটা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে দলের। তৃণমূলে যত নেতা তত গোষ্ঠী। কটাক্ষ বিজেপির।