মালদা;তনুজ জৈন;২৪জুন: কলেজে সেমিস্টারের পরীক্ষা চলাকালীন টুকলি কর ছিল এক ছাত্র। ওই ঘরের গার্ডের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক তা দেখতে পেয়ে ছাত্রের খাতা কেড়ে নেন। দশ মিনিট খাতা আটকে রাখেন। সেটাই না কি অপরাধ ওই অধ্যাপকের। এই ঘটনার জন্য সদলবলে কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষকে চোটপাট এবং হুমকি তৃণমূলের ছাত্র নেতার। অধ্যক্ষকে এলাকায় থাকতে হবে।এই কথা স্মরণ করিয়ে হুমকি। ফের বিতর্কে একাধিক অভিযোগে বিদ্ধ ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি। চটুল নাচের আসর বসানো থেকে শুরু করে শ্মশানের মাটি বিক্রি। যাকে নিয়ে এর আগেও বহু অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পদক্ষেপ নেয়নি দল। কলেজে কলেজে ছাত্র নেতার নামে গুন্ডা পুষছে তৃণমূল অভিযোগ বিজেপির। ঘটনার কথা এক বাক্যে স্বীকার করে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস মন্ত্রীর। সাফাই জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিমান ঝা। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের এই ছাত্র নেতার বাড় বাড়ন্ত বেড়েই চলেছে। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছে। হরিশ্চন্দ্রপুরের পিপলা কলেজে শুক্রবার পরীক্ষা চলাকালীন এক ছাত্রকে বেঞ্চের লেখা থেকে টুকলি করতে দেখেন অধ্যাপক। তিনি গিয়ে ওই ছাত্রের খাতা কেড়ে নেন। দশ মিনিট খাতা আটকে রাখেন। কেন ওই ছাত্রের খাতা আটকে রাখা হলো। তার কৈফিয়ত নিতে সোমবার বিকেলে বিমান ঝা সাত আট জনকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে আসে। কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ সুমিত নন্দীর ঘরে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। অধ্যক্ষ বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই বোঝেনি ওই ছাত্র নেতা। রীতিমতো দুর্ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে যান। এই ঘটনায় অধ্যক্ষ সহ কলেজের অন্যান্য কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছে। অধ্যক্ষের বক্তব্য তার বাড়ি অনেক দূরে। এই এলাকায় তিনি একাই থাকেন। স্বাভাবিক ভাবে যে ধরনের কথা বলে গেছে। তিনি আতঙ্কিত। প্রশ্ন হচ্ছে একজন ছাত্র নেতা কি ভাবে এই ধরনের আচরণ করতে পারে। ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তৃণমূল যাকে পদে বসিয়ে রেখেছে। সে যদি এই ধরনের ব্যবহার করে। তবে কি বার্তা যাবে ছাত্র সমাজের কাছে। যদিও এই বিমান ঝা কে নিয়ে বিতর্ক প্রথম নয়। এর আগে তার বিরুদ্ধে শ্মশানের মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। চটুল নাচের আসর জুয়ার ঠেক বসানোর অভিযোগ উঠেছে। বহু জায়গায় গুন্ডামি মস্তানিতে নাম উঠে এসেছে তার।এছাড়াও কর্তব্যরত পুলিশকে হেনস্থা এবং মারধরের অভিযোগে হয়ে ছিল গ্রেপ্তার। এতটাই গুণধর তৃণমূলের এই ছাত্রনেতা। যদিও তার পরেও তাকে পদে বহাল রেখেছে তৃণমূল। মন্ত্রী তাজমুল হোসেনের এলাকার এই ছাত্র নেতার আচরণ সম্বন্ধে তবে কি অবগত নন তিনি। রীতিমতো বিভিন্ন কর্মসূচিতে মন্ত্রীর আশে-পাশেই দেখা যায় এই বিমানকে। এই প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন জানান ঘটনার বিষয়ে তিনি শুনেছেন। কলেজে গিয়ে খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেবেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি কে খতিয়ে দেখতে বলা হবে বলে দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের।বিজেপির অভিযোগ ছাত্র রাজনীতির নামে গুন্ডা তৈরি করছে তৃণমূল। শিক্ষাব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এই ধরনের ছাত্র নেতারা ছাত্র সমাজের লজ্জা। তৃণমূলের সৎ সাহস থাকলে তাকে বহিষ্কার করুক। যদিও অভিযুক্ত ছাত্রনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।সমগ্র ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।