Type Here to Get Search Results !

EXCLUSIVE:দীর্ঘদিন নেই স্থায়ী শিক্ষক, দুইজন পার্শ্ব শিক্ষকের উপরে নির্ভর জুনিয়র হাই স্কুল! ক্লাস নিচ্ছে ছাত্ররা নিজেই

দীর্ঘদিন নেই স্থায়ী শিক্ষক, দুইজন পার্শ্ব শিক্ষকের উপরে নির্ভর জুনিয়র হাই স্কুল, তার মধ্যে একজন আসেন না নিয়মিত, ক্লাস নিচ্ছে ছাত্ররা নিজেই, শিকেয় উঠেছে পঠন-পাঠন, বিদ্যালয় চত্বরে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু ছাগল, মিড ডে মিল নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং নিয়োগ নিয়ে সরব বিরোধীরা, সাফাই তৃণমূলের।

মালদা;তনুজ জৈন;০৩অক্টোবর: নামমাত্র স্কুল। রয়েছে স্কুল বিল্ডিং। রয়েছে চারটি ক্লাস। খাতাই-কলমে রয়েছে ৩৬৭ জন ছাত্র-ছাত্রী। কিন্তু সীমানা প্রাচীর বিহীন স্কুল ভবনে চড়ে বেড়াচ্ছে গরু ছাগল। ধান শুকোতে দিচ্ছেন স্থানীয়রা। পাঁচ বছর ধরে স্কুলে নেই কোন স্থায়ী শিক্ষক। মাত্র দুই জন পার্শ্ব শিক্ষকের উপর নির্ভর এই স্কুল। তার মধ্যে এক জন আবার নিয়মিত আসেন না। ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেরাই ক্লাস নেন। স্কুলের এই দুরবস্থার কারণে ধীরে ধীরে স্কুল বিমুখ হয়ে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। প্রতিদিন মাত্র কুড়ি থেকে পঁচিশ জন ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে আসছে। সেই সুযোগে মিড ডে মিল নিয়েও চলছে দুর্নীতি।

প্রশ্নের মুখে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। সরব হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা অভিভাবক থেকে শুরু করে জন-প্রতিনিধিরা। যদিও পার্শ্ব শিক্ষকের দাবি স্থায়ী শিক্ষক যতদিন নিয়োগ না হয় স্কুলের পরিস্থিতি ঠিক হবে না। জেলা শিক্ষা দপ্তরকে বলা হবে সাফাই দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে কটাক্ষ বিজেপির। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের ভাটল জুনিয়র হাই স্কুলে চূড়ান্ত অব্যবস্থার এই ছবি সামনে এসেছে। ২০১৫ সাল থেকে পথচলা শুরু করে এই স্কুল। স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রথমে ছিলেন একজন। সাথে ছিল দুইজন পার্শ্ব শিক্ষক এবং একজন অশিক্ষক কর্মী। ২০১৯ সালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। তারপর থেকে স্থায়ী আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ হয়নি এই স্কুলে।দুই পার্শ্বশিক্ষক আশরাফুল হক এবং শামীমা পারভীন এই মুহূর্তে স্কুল চালাচ্ছেন। 

অভিভাবকদের অভিযোগ আশরাফুল হক নিয়মিত স্কুলে এলেও শামীমা ম্যাডাম আসেন না। যার কারণে পঠন-পাঠন শিকেয় উঠেছে। একজন পার্শ্ব শিক্ষক বা দুইজন শিক্ষক এলেও তাদের পক্ষে পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রত্যেক বিষয়ের ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিন যেমন শুধুমাত্র আশরাফুল বাবু এসে ছিলেন।এক ক্লাসের টাস্ক ছাত্রদের দিয়ে আবার এক দুজন ছাত্রকে সেই দায়িত্ব দিয়ে অন্য ক্লাসে তিনি যাচ্ছেন। এই ভাবেই কোনরকমে ক্লাস শেষ হয়ে মিড ডে মিল খেয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। দিন দিন কমে যাচ্ছে উপস্থিতির হার। 

স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সম্পাদক কৈলাস চৌধুরীর দাবি তিনি এখন শুধু খাতায় কলমে সম্পাদক। মূলত শিক্ষকের অভাবে স্কুলের এই দুরাবস্থা। সাথে গ্রামের লোকেরা স্কুলে গরু-ছাগল বেধে দিয়ে স্কুল চত্বর নোংরা করছেন। বর্তমানে তাকে স্কুলে ডাকা হয় না তাই তিনি যান না। স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির জন-প্রতিনিধি তথা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সবিতা সাহা এই নিয়ে সরব হয়েছেন।তিনি জানান এর আগেও তিনি স্কুলে গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। মাত্র একজন শিক্ষক আসছেন এখানে। সীমানা প্রাচীরের ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আর অভিভাবকদের অভিযোগ তারা বারবার স্কুলে বললেও কোন কিছু হয়নি। দুইজনের মধ্যে একজন আসছেন না। নতুন কোন শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না।যার ফলে ছাত্র ছাত্রীরা কিছুই শিখতে পারছে না স্কুলে গিয়ে। আরো অভিযোগ ২০ থেকে ২৫ জন মিড ডে মিল নিলেও খাতায়-কলমে দেখানো হচ্ছে ২৫০ জন। সেটা নিয়েও ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে বসছে মদের আসর। আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক না থাকায় পার্শ্ব শিক্ষক হয়েও আশরাফুল আলমের উপরেই সবটাই নির্ভর।কার্যত তিনিই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। তার দাবি ম্যাডামও নিয়মিত স্কুলে আসেন।গত সপ্তাহে তার বাবা মারা যাওয়াই তিনি ছুটি নিয়েছেন। বারবার শিক্ষা দপ্তরকে বলা হলেও স্থায়ী শিক্ষক আসেনি। স্থায়ী শিক্ষক না এলে এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন না হলে স্কুলের উন্নতি সম্ভব না। তৃণমূলের দাবি তারা সমস্তটা জেলা শিক্ষা দপ্তরকে জানাবেন। পরিস্থিতি কি ভাবে সমাধান হবে সেটা তারা দেখবেন। যদিও বিজেপির কটাক্ষ তৃণমূল ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করছে। দুর্নীতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ নিয়োগ। শিক্ষামন্ত্রী জেলে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর।

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Top Side