জাল দলিলের পর্দাফাঁস হতেই সামনে এলো তুলসীহাটা রেজিস্ট্রি অফিসে চলা অরাজকতার অভিযোগ, দালাল ছাড়া হয় না কাজ, কাজের জন্য দিতে হয় টাকা, মৃত ব্যক্তির নামে হয়ে যায় দলিল, একের পর এক অভিযোগ এলাকাবাসীর, দালালরাজ মেনে নিচ্ছে তৃণমূল, তৃণমূল এবং আধিকারিকদের নিশানা বিজেপির, দুর্নীতি প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপের হুঁশিয়ারী জেলা শাসকের
মালদা;তনুজ জৈন;২০জুলাই: রেজিস্ট্রি অফিস যেন ঘুঘুর বাসা।দালাল চক্রের বদান্যতায় দুর্নীতির আঁতুড়ঘর।আর সেই দুর্নীতিতেই মদত দিচ্ছে আধিকারিক এবং কর্মীদের একাংশ। উঠে আসছে এমনটাই বিস্ফোরক অভিযোগ। রেজিস্ট্রি অফিসে এসে দালাল এবং টাকা ছাড়া হচ্ছে না কোন রকম কাজ। ভূমি সংস্কার দপ্তরে জমির রেকর্ড করাতে গিয়ে জাল দলিলের পর্দা ফাঁস হতেই সামনে এলো রেজিস্ট্রি অফিস জুড়ে চলা অরাজকতার ছবি। দীর্ঘদিন ধরে বদলি না হয়ে একই অফিসে এক কর্মী থাকার কারণে এই ধরনের দুর্নীতি অভিযোগ বিজেপির। দুর্নীতি এবং দালাল চক্রের কথা মেনে নিচ্ছে তৃণমূলও। দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর পদক্ষেপ হবে হুঁশিয়ারী জেলা শাসকের।
মালদা জেলার তুলসীহাটার অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট সাব রেজিস্ট্রি অফিস। যেখানে হরিশ্চন্দ্রপুরের দুটি ব্লকেরই মানুষ জমি রেজিস্ট্রির কাজে আসেন। কিছু দিন আগে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে এক ব্যক্তি জমি রেকর্ড করাতে গিয়ে পাঁচটি জাল দলিল সহ গ্রেপ্তার হন। ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সুরজিৎ দাস বলেন এই ধরনের ব্যক্তিরা জাল দলিল নিয়ে গরিব মানুষদের জমি দখল করছে। সেই জাল দলিলে তুলসীহাটা রেজিস্ট্রি অফিসের সিল এবং এডিএসআর রমজান আলির স্বাক্ষর ছিল। কি ভাবে সিল এবং স্বাক্ষর জাল হলো সেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চলছে দালাল চক্রের মূল মাথার খোঁজ। আর তার মাঝেই সামনে এলো রেজিস্ট্রি অফিসের দালাল রাজ। রেজিস্ট্রি অফিসে কাজে আসা এলাকাবাসীর অভিযোগ এখানে সরাসরি কোন রকম কাজ হয় না। দালাল নিয়ে গেলে তবেই হচ্ছে কাজ। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।লেট ফি'র নাম করে টাকা নেওয়া হচ্ছে।এমনকি মৃত ব্যক্তির নামেও হয়ে যাচ্ছে দলিল বলে অভিযোগ।কিন্তু প্রশ্ন উঠছে যখন এই ধরনের দালাল রাজ এবং দুর্নীতি হচ্ছে।সেটা কি আধিকারিক এবং কর্মীরা জানতে পারছেন না। না কি এতেও মদত রয়েছে তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে ওই দপ্তরের হেড ক্লার্ক শফিকুল ইসলাম প্রায় আট বছর ধরে রয়েছেন এখানে। বিজেপির অভিযোগ এই ভাবে দীর্ঘদিন এক অফিসে একই কর্মীকে রেখে দেওয়ার ফলে দপ্তর কে এরা দুর্নীতির আতুরঘর করছে। যদিও হেড ক্লার্ক শফিকুল ইসলাম বা এডিএসআর রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তারা কোন মন্তব্য করতে চান নি। তবে মৌরিলদের সূত্রে জানা গেছে স্বাক্ষর এবং সিল হয়তো প্রতারকরা জাল করে ছিল।কিন্তু সিল কি ভাবে জাল হলো।যদিও রেজিস্ট্রি অফিস থেকে সিল বা স্ট্যাম্প চুরি হয় তবে কেন অভিযোগ দায়ের হয়নি এর আগে। উঠেছে প্রশ্ন?এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির আরো অভিযোগ এতে তৃণমূল যুক্ত রয়েছে। মদত রয়েছে তৃণমূল নেতাদের।যদিও দালাল রাজের কথা মেনে নিয়ে তৃণমূলের দাবি এরকম চলতে থাকলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।মুখ্যমন্ত্রী যা আদেশ দিয়েছেন সেটা অমান্য করা হবে না। তবে হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় জমি মাটি নিয়ে যে দালাল রাজ চলছে।তা কার্যত স্পষ্ট।জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন যে অভিযোগ উঠে আসছে সেখানে যদি দুর্নীতি প্রমাণিত হয় তবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও।