সুশোভন সিংহ; বাংলাদেশ:- অবশেষে বাংলাদেশের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি আন্দোলনকে মান্যতা দিয়ে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হলো জামাত ও ছাত্রশিবির। সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিলেন হাসিনা সরকার। অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে দেশটির রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি আন্দোলন করে গিয়েছে জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে। আইনি লড়াইও হয়েছে বহুবার। বাংলাদেশের সংবিধানকে সর্বোচ্চ হিসেবে স্বীকার না করার কারণে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসাবে জামাতে ইসলামির নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেছে ২০১৮-য়। অবশেষে সন্ত্রাস-বিরোধী আইনে পাকিস্তানি সেনাদের সহচর জামাতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল শেখ হাসিনা সরকার।
হাসিটা সরকারের দাবি, সম্প্রতি দেশজুড়ে কোটা আন্দোলনে ছাত্রদের মদ্ত দিয়ে গোটা দেশে অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়েছিল জামাত। দেশে সার্বভৌমত্ব এবং জাতিগত বিন্যাসের ক্ষেত্রে জামাত ভয়ংকর। উন্নতিশীল বাংলাদেশের পথের কাঁটা এই জামাত। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বৃহস্পতিবার বিকেলে নোটিস দিয়ে দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পরে একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “জামাত ও ছাত্র শিবিরকে এখন থেকে জঙ্গি সংগঠন হিসাবেই মোকাবিলা করা হবে। আমি নিশ্চিত, নিষিদ্ধ হওয়ার পরে এরা আত্মগোপনে যাবে এবং নাশকতার কাজ শুরু করবে।” প্রাণহানি ও নাশকতার তদন্তে তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাহায্য নিতে চান বলেও ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলি সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, অনেক আগেই এই কাজ করা উচিত ছিল। জামাতের শরিক বিএনপি এই পদক্ষেপকে অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছে। জামাতের আমির শফিকুর রহমান বিবৃতি দিয়ে সরকারের এই পদক্ষেপের নিন্দা করেছেন। অন্যদিকে ১৪ দলের জোট-শরিকদের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা হাসানুল হক ইনু বলেন, “অনেক আগেই এই কাজ করা উচিত ছিল। তা হলে আজ এই পরিস্থিতির উদ্ভব হত না।” সূত্রের খবর, শেখ হাসিনা বৈঠকে বলেন সরকার এত দিন রাজনৈতিক ভাবে জামাতের মোকাবিলার পথে চলেছে। এখন আর উপায় নেই।
জামায়াতের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ ও নৈরাজ্যবাদের ‘কোনো সম্পর্ক নেই’ দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে ভূমিকা পালন করেছে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় জামায়াতের ছয়জন নেতাকে জঙ্গিদের বোমা হামলায় প্রাণ হারাতে হয়েছে।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামায়াতকে ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মের অপব্যবহারের’ কারণে। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে তারা রাজনীতি করার অধিকার ফিরে পায়।