সুশোভন সিংহ:- দীর্ঘ ১৩ বছর তৃণমূলে শাসনকালে কড়া পদক্ষেপ নেয়া হলো দলের পক্ষ থেকে। মহিলা বনধিকারিক কে হুমকি দেওয়ার জেরে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কারা মন্ত্রী অখিল গিরিকে। শনিবার মহিলা বনধিকারিক মনীষা সাউয়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন মন্ত্রী। আর তার জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি। অস্বস্তিতে পড়ে শাসকদল তৃণমূল।
এই ঘটনার ভিডিয়ো সমাজমাধ্যম মারফত ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় জনমানসে। প্রশ্ন ওঠে, কী ভাবে এক জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তথা মন্ত্রী কোনও সরকারি আধিকারিকের সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে পারেন। বিজেপির আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ‘‘বিধায়ক অখিল গিরি আগে আমাদের সম্মাননীয় রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি কোনও শাস্তির সম্মুখীন হননি। এখন মৌখিক ভাবে এক জন মহিলা সরকারি আধিকারিককে গালিগালাজ করেছেন এবং হেনস্থা করেছেন।
রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে কু-কথার পরিপ্রেক্ষিতে সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে শোনা গেছিল। তবে এবার যথেষ্ট করা পদক্ষেপ নেয়া হলো তৃণমূলের দলের পক্ষ থেকে। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত সরকারি রিপোর্ট চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি খামবন্দি রিপোর্ট দিতে চলেছেন বনমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা। এই ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরেই ওই বন আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছিলেন বিরবাহা।
ঘটনাটির ভিডিও সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক মাধ্যমে চাউর হতেই বিজেপির আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল রাজনৈতিক ময়দানে নেমে পড়েন। বিজেপি নেত্রী জানান, ‘‘বিধায়ক অখিল গিরি আগে আমাদের সম্মাননীয় রাষ্ট্রপতি শ্রীমতি দ্রৌপদী মুর্মু সম্পর্কে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন। তা সত্ত্বেও তিনি কোনও শাস্তির সম্মুখীন হননি। এখন মৌখিক ভাবে এক জন মহিলা সরকারি আধিকারিককে গালিগালাজ করেছেন এবং হেনস্থা করেছেন। তাঁর এমন আচরণ সত্ত্বেও সাহসী আধিকারিক ভয় পাননি। এ জন্য আমি তাঁকে স্যালুট করি। তাঁর নিরাপত্তার জন্য উদ্বিগ্ন, কিন্তু অত্যন্ত গর্বিত যে আমাদের রাজ্যে এখনও এমন সাহসী ব্যক্তি রয়েছেন, যাঁরা তাঁদের ইউনিফর্মের মর্যাদা বজায় রাখেন এবং কী ভাবে এর মর্যাদা রক্ষা করতে হয় তা জানেন।’’
অবশেষে সব জল্পনার অবসান করে মন্ত্রী অখিল গিরির বিরুদ্ধে করা পদক্ষেপ নিল দল তৃণমূল। তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর অনুসারে, অখিলগিরিকে নিঃশর্তে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি মন্ত্রীসভা থেকে ইস্তফা নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর মন্ত্রী যদি স্বয়ং পদত্যাগ না করেন তবে মন্ত্রিসভার নির্দেশে অখিলগিরিকে মন্ত্রী থেকে বরখাস্ত করা হতে পারে। তবে মন্ত্রী অখিল গিরি এই বিষয়ে জানান, "আমার কাছে দলের পক্ষ থেকে কোনরকম নির্দেশ আসেনি",। এই বিষয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে দীর্ঘকালের তৃণমূল সরকারের শাসন কালে সব থেকে কড়া পদক্ষেপ।