সুশোভন সিংহ; বালুরঘাট:- আরজি কর ঘটনার মধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় বংশীহারী ব্লকের গাংগুরিয়ায় ১১ বছরের এক আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ। বৃহস্পতিবার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বংশীহারী থানার পুলিশ। অভিযুক্ত প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার ছেলে বলে অভিযোগ করা হয় বিজেপি এবং সিপিএমের পক্ষ থেকে। তৃণমূলকে আলিমালিপ্ত করা হচ্ছে, অভিযুক্তর বাবার সাথে তৃণমূলের কোন যোগ নেই জানালেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত্রে বংশীহারী ব্লকের গাঙ্গুরিয়া অঞ্চলে এক আদিবাসী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করার চেষ্টা করা হয়। নাবালিকার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে দৌলতপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তিকে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে ধৃত ওই ব্যক্তির নাম প্রিয়নাথ রাজবংশী। এই ঘটনার পরবর্তীতে এলাকায় সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তর বাড়িতে হামলা চালায়। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার খবর পেয়ে গঙ্গারামপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দীপাঞ্জন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
অন্যদিকে আরজি কর ঘটনার মতো এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক লড়াই। জেলার বিজেপি এবং সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির বাবা প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা এবং তিনি ওই গ্রাম সংসদের বুথ সভাপতি। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই ময়দানে নামেন তৃণমূল জেলা সভাপতি সুভাষ ভাওয়াল। সামাজিক মাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় জেলা সভাপতি জানান, ' অভিযুক্ত কিংবা উপযুক্তর পরিবারের সাথে তৃণমূলের কোনো যোগ নেই, তৃণমূল প্রথম থেকেই এই ঘটনার নিন্দা করেছে এবং পুলিশকে অভিযুক্তকে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করেছে, '।
এই বিষয়ে আমরা(আপনার নিউজ) টেলিফোন মারফত সুভাষ ভাওয়ালের সাথে যোগাযোগ করি। তৃণমূল জেলা সভাপতি আমাদের জানান, ' দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ওই বুথে অন্য একজন সভাপতি রয়েছে এর সাথে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই, আমরাই অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি,এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধীদলগুলো রাজনীতি করছে তৃণমূলকে এমন একটি জঘন্য ঘটনার সাথে জড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। এর পাশাপাশি সুভাষ জানান, ' এই বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র এই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশাসনকে করা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
যদিও তৃণমূল জেলা সভাপতি ভিডিও বার্তার বিষয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী আমাদের জানান,' তৃণমূল এখন এই ঘটনাকে লুকানোর চেষ্টা করছে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের জানিয়েছেন অভিযুক্ত ঐ ব্যক্তি এবং তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করে আসছে এবং অভিযুক্তর পিতা সক্রিয় তৃণমূল নেতা। এর পাশাপাশি ফারুক চৌধুরী জানান, ' এই ঘটনা প্রথম নয় অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি এর আগে এরকম ঘটনা অনেকবার ঘটিয়েছে,'। বিজেপি সুত্রে খবর, শুক্রবার দুপুর ২টা নাগাদ গঙ্গারামপুর মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে বিজেপির পক্ষ থেকে।