সুশোভন সিংহ; আপনার নিউজ:- সোমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সেনাবাহিনীর চপারে বোনকে নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। প্রথমে আগরতলা তারপরে গাজ়িয়াবাদে এসে পৌঁছায় সাবেক বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রীর চপার। তবে সূত্রের খবর ভারতেও জায়গা হলো না শেখ হাসিনার! মঙ্গলবার সকালে তা পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সকাল ৯টা নাগাদ বিমানটি গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেস থেকে রওনা দিয়েছে। কিন্তু বিমানটি কোথায় গিয়েছে, তার মধ্যে হাসিনা ছিলেন কি না, এখনও স্পষ্ট নয়। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি।
সোমবার রাতে ভারতীয় উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাথে সাক্ষাৎ করেন হাসিনা। একটি সূত্রের খবর অনুসারে বাংলাদেশ ছেড়ে লন্ডনে যেতে চেয়েছেন হাসিনা। কিন্তু ব্রিটেন থেকে এখনও সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। সেই কারণেই আরও কিছু দিন তাঁকে ভারতে থাকতে হবে বলে মনে করা হচ্ছিল। তবে মঙ্গলবার সকালে শেখ হাসিনার চপার উড়তেই জন্ম নিয়েছিস নানান প্রশ্নের। তবে কি ভারত ছেড়ে অন্য কোন নতুন গন্তব্য স্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন তিনি? সূত্রের আরও দাবি, ব্রিটেন ‘না’ করে দিলে কোথায় যাবেন, তা-ও ভেবে দেখছেন হাসিনা। লন্ডনে না গেলেও ইউরোপেই থাকতে চান তিনি। অন্য কোন দেশে আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে, আপাতত ভারতে থেকেই তা বিবেচনা করে দেখছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
গত তিন মাস ধরে কোটা সংস্করনের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ। পরবর্তী সময়ে দেশটি সুপ্রিম কোর্টের আদেশে আন্দোলন কিছুটা শিথিল হলেও, পরবর্তী সময়ে জামাত এবং বিএনপির অনুপ্রবেশে ছাত্র আন্দোলন কমশই জঙ্গি আন্দোলনের পরিণত হয়। শেখ হাসিনার পতনের দাবিতে উত্তাল হয় বাংলাদেশের রাজপথ। এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্যে গণভবনে লংমার্চের প্রস্তুতি নেওয়া হয় দেশটির জনগণের পক্ষ থেকে। ক্রমশই যেন ছাত্র আন্দোলন পরিণত হয় শেখ হাসিনার উৎখাত আন্দোলনে। বেগতিক বুঝে দেশ থেকে বোনকে নিয়ে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান হাসিনা।
লাগাতার সরকার বিরোধী আন্দোলনের মাঝে সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন হাসিনা। কপ্টারে করে বাংলাদেশ ছেড়েছেন তিনি। বাংলাদেশে আপাতত সেনার শাসন চলছে। দায়িত্ব নিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ়-জ়ামান। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। এই পরিস্থিতিতে সোমবার ঢাকায় হাসিনার আবাস ‘গণভবনে’ ঢুকে পড়েছিলেন শয়ে শয়ে মানুষ। সেখানে লুটপাট হয়। এমনকি, হাসিনার বাবা তথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তিও ভেঙে দেয় উত্তেজিত জনতা।
তবে অন্যদিকে, হাসিনা পুত্র সাজিব ওয়াজেদ জয় ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ঘোষণা করেছেন, রাজনীতি ছাড়ছেন শেখ হাসিনা। এমনকি তার পরিবারের আর কেউ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আগ্রহী হবেন না। জয় আমেরিকায় থাকেন। তাঁর কন্যা সাইমা ওয়াজেদ থাকেন দিল্লিতে। তবে হাসিনার বোন রেহানার ব্রিটেনের নাগরিকত্ব রয়েছে। তাঁর কন্যা ব্রিটেনের সংসদের সদস্য। ফলে রেহানার ব্রিটেনে যেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। মনে করা হচ্ছে, তিনি আগেই ব্রিটেনে চলে যাবেন। তবে হাসিনা কী করবেন, এখনও স্পষ্ট নয়।