আপনার নিউজ ডেক্স:- ছাত্র এবং গণআন্দোলনে অবসান হয়েছে হাসিনা সরকারের। নোবেল জয়ী বাঙালি ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে বর্তমানে দেশটির ব্যাংকগুলোতে দেখা দিয়েছে নগদের ঘাটতি। হাসিনার ১৫ বছরে দুর্দান্ত গতিতে এগোচ্ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। ২০১১ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে একটানা ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলাদেশের জিডিপি। কিন্তু, হাসিনার বিদায় সেই দেশের অর্থনীতির ভয়ানক ক্ষতি করতে চলেছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দেশ-বিদেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করেছেন বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারকে।
ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশ যেন পাকিস্তানে পরিণত না হয় সেই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলেছে হামলা লুটতরাজ। দেশের বিভিন্ন থানায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দুষ্কৃতদের দ্বারা। অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়ে যাওয়ার পরেও দেশজুড়ে অশান্তি যেন থামছেনা। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
২০১১ সালের তুলনায় বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২০১৯-এ দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছিল ২,১৫৪ মার্কিন ডলার। কোভিড-১৯ মহামারিতে ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। ২০২৪-র মধ্যে তা থেকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার, বাংলাদেশি টাকার দাম, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার – সবই কমেছিল। একই সঙ্গে বেড়েছিল মূল্যবৃদ্ধির হার এবং বেকারত্ব। তবে, হাসিনার বিদায় সেই দেশের অর্থনীতির ভয়ানক ক্ষতি করতে চলেছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে অর্থনীতি ফের মহামারির সময়ের মতো খাদে পড়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে মুডি’স-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, দেশজুড়ে বেশিরভাগ এটিএম কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। সাধারণ জনগণ ব্যাংকে আমানত টাকা তুলতে পারছে না ঠিকঠাক। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের একসাথে ৫০ হাজারের বেশি টাকা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এর ফলে বাজারে দেখা গিয়েছে অর্থনৈতিক মন্দা। এর সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। যদিও দেশটির ছাত্র সমাজ এই ব্যাপারে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সজাগ করছেন। ইতিমধ্যেই দেশটির আমদানিকারী দ্রব্য পাইকারি বাজারে বিক্রি করতে ব্যর্থ হচ্ছেন ব্যবসায়ী মহল।
ভারতীয় এক গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, মুডি’স-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, চলতি আর্থিক বছরে বাংলাদেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশের মতো থাকবে। কিন্তু, সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে জিডিপি বৃদ্ধির হার আরও কমে ৫.১ শতাংশ হয়ে যেতে পারে। জন বিক্ষোভের ফলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে দেশটির কল কারখানা। যদি বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত শান্ত না হয় এবং কল-কারখানাগুলি আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে হয়, সেই ক্ষেত্রে কোভিড মহামারীর সময়ের মতো রফতানি কমে যেতে পারে বাংলাদেশের, এমনটাই বলা হয়েছে মুডি’স
প্রতিবেদনে।