পরিতোষ সরকার,মালদা:- এনায়েতপুর কাণ্ডে উস্কানি দিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি। এমনই অভিযোগ তুললেন তৃণমূল বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্র। মানিকচক ব্লকের এনায়েতপুর এলাকায় পুলিশ জনতার খন্ড যুদ্ধের প্রায় এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো থমথমে এলাকা। এলাকার পুরুষেরা গ্রাম ছাড়া। ভয়ে আতঙ্কে থাকা এলাকাবাসীর সাথে দেখা করে আশ্বাস বার্তা দিলেন তৃণমূল বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্র। পুলিশ আর কাউকে ধরবেনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে সাফ জানালেন। তৃণমূল বিধায়ক আর কংগ্রেস ও বিজেপির ওপর প্ররোচনার অভিযোগ কে কেন্দ্র করে জোর রাজনৈতিক তরজা মানিকচক জুড়ে। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ফালতু কথা বলে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করছে বিধায়িকা দাবি কংগ্রেসের। যদিও বিজেপির দাবি,মানুষকে পরিষেবা দিতে ব্যর্থ এই সরকার। তৃণমূলের নির্দেশেই পুলিশ বেছে বেছে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ধরছে।
প্রসঙ্গত বিদ্যুৎ বিভ্রাট কে কেন্দ্র করে ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার তেতে উঠেছিল মানিকচকের এনায়েতপুর এলাকা। বিদ্যুতের দাবিতে রাজ্য সড়কে এলাকাবাসীর করা অবরোধ তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকে। পরিস্থিতি এতটাই নগরের বাইরে যাই যেখানে আত্মরক্ষায় পুলিশকে গুলি চালাতে হয়। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ এলাকা জুড়ে ধরপাকড় অভিযান চালাচ্ছে। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরো কয়েকশো মানুষকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে। পুলিশের এই ধর পাকড় অভিযানেই আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। একাধিক গ্রামের পুরুষেরা বাড়ি ছাড়া রয়েছে। ভীত আতঙ্কিত এই এলাকার বাসিন্দাদের সাথে দেখা করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মানিকচক বিধানসভার তৃণমূল বিধায়িকার সাবিত্রী মিত্র। পাশাপাশি জেলা তৃণমূল সভাপতি ও বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী ও তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বরা এনায়েতপুরের বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে বাসিন্দাদের সাথে কথা বললেন। গ্রামের মহিলাদের মঞ্চ থেকে সরাসরি বার্তা দিলেন বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্র। আর কোন মানুষকে তিনি গ্রেফতার হতে দেবেন না সকলেই নিজেদের বাড়িতে নিশ্চিতে থাকার বার্তাও রাখলেন তিনি।পাশাপাশি তিনি জানালেন, মানুষকে উস্কানি দিয়ে চক্রান্ত করে এই গোটা ঘটনা ঘটিয়েছে কংগ্রেস ও বিজেপি। যারা মানুষের জন্য কাজ করতে জানে না তারা কেবলমাত্র মানুষকে উস্কানি দিয়ে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ এবং মানুষ আহত হয়েছে দুটোই বেদনাদায়ক। আমরা কাজ করছি। যাতে বিদ্যুতের পরিষেবা আরো উন্নত মানুষ পায়।
বিধায়িকার কংগ্রেস এবং বিজেপি বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মতিউর রহমানের দাবি, বিধায়িকা যে ধরনের কথা বলছে তা কেবল ফালতু কথা। এই ঘটনায় কারোরই কোন উস্কানি নেই। মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যা নিয়েই মানুষ পথে নেমেছিল। এখন বিধায়িকা বলছেন কাউকে গ্রেফতার হতে দিবেন না। তাহলে এতটা দিন ধরে মানুষকে কেন পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এত মানুষকে কেনইবা গ্রেফতার করা হয়েছে। আসলে বিধায়িকা এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। আসলে বিধায়িকা মানুষকে পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় সারতে চাইছে তৃণমূল।
এপ্রসঙ্গে সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌড় চন্দ্র মন্ডল জানান, নিজের দোষ ঢাকতে যা করতে হয় সেটাই করছে তৃণমূলের বিধায়িকা। মানুষের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ করতে পারছে না এই সরকার। বেছে বেছে অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তৃণমূলের প্ররোচনায় যারা তৃণমূল করছে তারা ছাড় পাচ্ছে কিন্তু বামফ্রন্ট বিজেপি ও কংগ্রেসের কর্মীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে এই ঘটনায়। তৃণমূলের উস্কানিতে এই এনায়েতপুরের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি।
যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, যারা প্রকৃত দোষী। সেদিনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত যারা পুলিশের উপর আক্রমণ করেছে তারা পালিয়ে গেছে। আর যারা নির্দোষ তাদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ যখন তখন বাড়িতে ঢুকে ধরপাকড় চালাচ্ছে ফলে এলাকার পুরুষ মানুষেরা ভয়ে আতঙ্কে পালিয়ে রয়েছে। যারা নির্দোষ তাদের দ্রুত রেহাই এর ব্যবস্থা করা হোক বলেই দাবি স্থানীয়দের।