মানবিক পুলিশ, পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী স্বামীর মৃত্যুতে চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েছিলেন স্ত্রী, হচ্ছিল না শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের খরচ জোগাড়, খবর পেয়েই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন আইসি, দিলেন পাশে থাকার আশ্বাস
মালদা;তনুজ জৈন;২০জুলাই: একদিকে অপরাধ দমন করে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করে যে পুলিশ।পাশাপাশি সেই পুলিশকে এবার দেখা গেল মানবিক রূপেও। ভিন রাজ্যে কাজ করতেন এক ব্যক্তি। অসুস্থ থাকায় ইদানিং কালে বাড়িতেই থাকতেন। কিছুদিন আগে হয় মৃত্যু। ছোট ছোট চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে অথৈ জলে পড়ে স্ত্রী।জোগাড় হচ্ছিল না শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের খরচটুকু।সেই খবর যায় আইসির কানে। তারপরে পুলিশ কর্মীদের নিয়ে সটান সেখানে তিনি। শ্রাদ্ধের খরচের জন্য করলেন আর্থিক সাহায্য। দিলেন পাশে থাকার আশ্বাস।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত কনুয়া গোপালপুরের বাসিন্দা বাইশুর দাস (৪০)।ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি।কিন্তু সাম্প্রতিক কালে অসুস্থতার কারণে বাড়িতে চলে আসেন। পরিবারে স্ত্রী ছাড়া রয়েছে দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে। তার উপার্জনের উপরেই নির্ভর করে চলতে সংসার। স্বাভাবিক ভাবেই ব্যাপক দারিদ্রতার সম্মুখীন হয় ওই পরিবার।অসুস্থতা জনিত কারণে কিছু দিন আগে বাইশুর বাবুর মৃত্যু হয়। একদিকে স্বামীর মৃত্যু শোক অন্যদিকে দারিদ্রতা। দুইয়ে মিলে দিশেহারা হয়ে পড়েন স্ত্রী নাগরী দাস।এমনকি বাইশুর বাবুর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য খরচের জোগাড় করতে অপারক হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা অনেকেই সাহায্য এগিয়ে আসেন। কিন্তু সেটাও যথেষ্ট ছিল না। দুর্দশাগ্রস্থ এই পরিবারের কথা জানতে পারেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার। জানতে পেরে এদিন তিনি গোপালপুরে ছুটে যান।এদিকে বাড়িতে হঠাৎ পুলিশকে দেখে গ্রাম্য সহজ সরল পরিবারের লোকেরা ভয় পেয়ে যায়। তারপরে তারা বুঝতে পারে আসল কারণ। আইসি ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সাহায্য তুলে দেন।শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের জন্য আরো কোন কিছুর প্রয়োজন হলে পাশে থাকার আশ্বাস দেন পরিবারকে। সাথে ওই এলাকার ভিলেজ পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের বলেন ওই পরিবারের প্রতি নজর রাখতে।কোন অসুবিধায় পড়লেই তাকে জানাতে।দিশেহারা এই পরিবার সাহায্য পেয়ে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।
আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, পরিবারের অবস্থা সত্যি খুব খারাপ। যতটা করা যায় মানবিক ভাবে আমরা করলাম। এই পরিবারের পাশে রয়েছি।
স্ত্রী নাগরী দাস বলেন, আমাদের অবস্থা এই মুহূর্তে খুব খারাপ। কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। পুলিশ এসে সাহায্য করলো। অন্তত শ্রাদ্ধের কাজটুকু এবার করতে পারব।
বৌদি সুশীলা দাস বলেন, প্রথমে পুলিশকে দেখে হঠাৎ আমরা ঘাবড়ে গিয়ে ছিলাম। তারপর জানতে পারলাম আমাদের সাহায্যের জন্য এসেছে। সত্যি এই মুহূর্তে আমাদের সাহায্যের খুব দরকার ছিল।