আপনার নিউজ ডেক্স :- করোনার সময় যে মাস্ক লাখ লাখো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। এবার সেই মাস্ক সোনারপুরের পলাতক অভিযুক্ত জামালউদ্দিন সর্দার-কে ধরিয়ে দিতে সাহায্য করল পুলিশকে। মুখোশের জন্য ধরা পড়লেন পুলিশের জালে। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, মাস ছয়েক অন্যত্র গা-ঢাকা দেওয়ার ছক ছিল জামালের। কিন্তু স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তা হচ্ছিল। তাঁদের ‘নিরাপদে’ কোথাও রাখতে চেয়েছিলেন। সেই ছক কষতে গিয়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন শিকলে বেঁধে মহিলাকে পেটানোয় অভিযুক্ত জামাল।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অলিখিত মাতব্বরদের কর্মকাণ্ড সামনে এসেছে। যার শুরুটা হয়েছিল উত্তর দিনাজপুর থেকে। এইসব মাতব্ব্বররা নিজেদের এলাকায় সাম্রাজ্য সৃষ্টি করেছে। আইন কানুনকে তোয়াক্কা না করেই নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে বিচার ব্যবস্থা। এমনই এক অভিযুক্ত মাতবর হল জামাল। জামালের কুকীর্তি কথা সামনে আসতেই পালিয়ে যান এই অভিযুক্ত। পুলিশ তিন দিন ধরে হন্নী হয়ে খুজলেও খোঁজ মেলেনি এই সরকারের। অবশেষে নিজের ভুলের জন্যেই পুলিশের জালে ধরা পরল জামাল।
পুলিশ সূত্রে খবর, একের পর এক গ্রামবাসী তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলা শুরু করতেই গ্রেফতারির আশঙ্কায় ভুগছিলেন তিনি। তাই মঙ্গলবার দুপুরেই বাড়ি ছেড়েছিলেন। সন্ধ্যার দিকে পাঁচিল টপকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান জামালের স্ত্রী এবং ছেলেও। ওই দিনটিতে ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় শ্বশুরবাড়ির কাছে কোথাও থাকার পরিকল্পনা ছিল জামালের। কিন্তু পুলিশের ভয়ে সেই সাহস করতে পারেননি। এ দিক-ও দিক ঘুরে জঙ্গলের মধ্যে রাতটা কাটান জামাল। দিনের আলো ফুটতেই মাস্ক মুখে দিয়ে ঘুটিয়ারি স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোনারপুরের উপর দিয়েই বিধাননগর স্টেশনে নামেন। এক পরিচিতের কাছে যান তিনি। বুধবার ওখানেই কাটান।
সূত্রের খবর অনুসারে, গোটা রাজ্য জুড়ে যখন জামাল কাণ্ডে তোলপাড়। ঠিক সেই সময় জামালের আইনজীবী জামালকে আত্মসমর্পণ করতে বাধা দেয়। এর ফলে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা চালায় এই অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, আইনজীবীর বারণ শুনে আবার এলাকা ছাড়েন জামাল। তার মধ্যে নিজের ফোন পরিবর্তন করে নিয়েছেন। কিনেছিলেন নতুন সিম। মাস ছয়েক অন্যত্র চলে যাওয়ার ছক কষে ফেলেন। চিন্তা হচ্ছিল স্ত্রী-সন্তানের জন্য। তাঁদের ‘নিরাপদ আশ্রয়ে’ রাখার কথা ভেবে শাশুড়িকে ফোন করে ফেলেন জামাল। তাতেই নিজের বিপদ বাড়ান। তক্কে তক্কে ছিল পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জামালের এক শ্যালককে সোনারপুর থানায় তুলে আনে তারা। এর পর আর কাউকেই সাহস করে ফোন করতে পারছিলেন না সোনারপুরের ‘দামাল’ জামাল। বৃহস্পতিবার তিনি রাত কাটান ডানকুনি এলাকায় এক পরিচিতের বাড়িতে। শুক্রবার স্ত্রী-সন্তানকে একটি জায়গায় রেখে নিজেও আত্মগোপনের চেষ্টায় ছিলেন। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান জামাল।