Type Here to Get Search Results !

বরুই, রশিদাবাদের পর এবার তুলসিহাটা, ব্লক সভাপতি মানিক দাস কে সরানোর জোরালো দাবি, মোটা টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রির অডিও ক্লিপ ভাইরাল

বরুই, রশিদাবাদের পর এবার তুলসিহাটা, ব্লক সভাপতি মানিক দাস কে সরানোর জোরালো দাবি, মোটা টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রির অডিও ক্লিপ ভাইরাল, ছন্নছাড়া শাসক শিবির, নীরব বিধায়ক, খোঁচা বিরোধীদের



মালদা;তনুজ জৈন;০২সেপ্টেম্বর: শাসক দলের অন্দরে এবার নয়া দুর্নীতির পর্দাফাঁস। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভরাডুবির পরেই একাধিক এলাকায় ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে মোটা টাকায় টিকিট বিক্রির অভিযোগ।ভাইরাল অডিও ক্লিপ।দলের অন্দরেই ব্যাপক ক্ষোভ ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে। ক্রমশ জোড়ালো হচ্ছে পদ থেকে সরানোর দাবি।হারের ধাক্কায় সামনে এসেছে তৃণমূলের হতশ্রী চেহারা।অস্বস্তি বাড়ছে নেতৃত্বের।সমগ্র ঘটনা নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধীরা।শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকে শোচনীয় ফলাফল হয়েছে শাসকদলের।পঞ্চায়েত সমিতির পাশাপাশি একাধিক পঞ্চায়েত হাত ছাড়া হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত চাঁচল বিধানসভার অন্তর্গত।আর এই চারটি এলাকাতে এই মুহূর্তে কার্যত ছন্নছাড়া শাসক শিবির।প্রকাশ্যে দলের অন্দরের কোন্দল।এই চারটি অঞ্চলের দায়িত্বে রয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১(বি) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি মানিক দাস।আর তার বিরুদ্ধেই নির্বাচনে পরাজয়ের পরেই মোটা দুর্নীতির অভিযোগ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বিক্রির নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে দলের অন্দরেই। একের পর এক এলাকা থেকে উঠে আসছে এই অভিযোগ। বরুই, রশিদাবাদের পর এবার মানিক দাসের বিরুদ্ধে টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠল তুলসীহাটা অঞ্চলে। সদ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিট বিক্রি নিয়ে ভাইরাল হয়েছে একটি অডিও ক্লিপ। "সেই অডিও ক্লিপে তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা আভা দাসের ছেলে বাপি দাসের সঙ্গে অঞ্চল সভাপতি আবুল হোসেন আনসারীর কথোপকথন শোনা যাচ্ছে"। যেখানে শোনা যাচ্ছে আবুল হোসেন আনসারী টিকিটের জন্য বাপি দাসের কাছে ২ লক্ষ টাকা চাইছেন। সাথে তিনি বলছেন এই টাকা ব্লক সভাপতি মানিক দাসকে দিতে হবে।আর এই অডিও ক্লিপ ভাইরাল হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য রাজনৈতিক মহলে। পঞ্চায়েত সদস্যা আভা দাসের ছেলে বাপি দাস নিজে এই কথোপকথনের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। সাথে তৃণমূলের অনেকেই এই অভিযোগ করছেন যে মানিক দাস মোটা টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের টিকিট দিয়ে ছিল।যার ফলে অঞ্চল হাত ছাড়া হয়েছে। লোকসভার আগে মানিক দাসকে না সরালে দলের হাল ফিরবে না বলে অভিযোগ বিক্ষুব্ধদের। কিষান সেলের ব্লক সভাপতি থেকে শুরু করে প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য সকলেই মানিক দাস কে সরানোর দাবিতে সরব হয়েছেন। স্থানীয় বিধায়ক নিহার রঞ্জন ঘোষের সঙ্গে ব্লক সভাপতির দূরত্ব তৈরী হয়েছে। যদিও দলের এত কোন্দল সামনে আসলেও নিরব দর্শক হয়ে রয়েছেন বিধায়কও। অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়া নিয়ে মুখ খুলতে চাননি ব্লক সভাপতি মানিক দাস ও অঞ্চল সভাপতি আবুল হোসেন আনসারী। অন্যদিকে সমগ্র ঘটনা নিয়ে ব্যাপক কটাক্ষ বিজেপির।


হরিশ্চন্দ্রপুর ১(বি) ব্লক তৃণমূল কিষাণ সেলের সভাপতি মনোজ রাম বলেন, একটি অডিও ক্লিপ শুনতে পেয়েছি।এ কথা সত্য লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করেছেন ব্লক সভাপতি।অযোগ্যদের টিকিট দেওয়ার ফলে দল হেরেছে। দ্রুত যোগ্য লোককে দায়িত্বে না আনলে মুশকিল আছে।


তৃণমূল ১ বি ব্লক সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন জেলা পরিষদ সদস্য সন্তোষ চৌধুরীর অভিযোগ, এই দুর্নীতিগ্রস্তদের দল থেকে সরাতে হবে।না তো লোকসভার আগে আরো মুশকিল হবে দলের।এদের দলে রাখলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়া যাবে না। নিয়ম অনুযায়ী টিকিটে যাদের নাম উঠেছিল কেউ টিকিট পাইনি। ব্লক সভাপতি শুধু টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের টিকিট দিয়েছে।


স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা আভা দাসের ছেলে বাপি দাসের দাবি, এই ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের কথোপকথন সত্য। ভোটের আগে আমার মায়ের টিকিটের জন্য অঞ্চল সভাপতি ফোন করে টাকা চেয়েছিল ব্লক সভাপতির নাম করে।এই ব্যাপারে এখন বিশেষ কিছু বলছি না যা বলার দলের অভ্যন্তরে বলবো।


স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী মনসুর আলম বলেন এই ভাবে অঞ্চল সভাপতি অনেকের কাছেই টাকা চেয়ে ছিল টিকিটের জন্য। অনেকে টাকা দিয়েছেও। আমার কাছে চাইলেও আমি দিইনি। কারণ আমরা যোগ্য হিসেবে দাড়িয়েছি। অযোগ্যদের টিকিট দিয়ে অঞ্চল হাত ছাড়া করেছে।


বিজেপি নেতা কিষান কেডিয়ার কটাক্ষ, এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। সম্পূর্ণ দলটাই ধান্দাবাজ। টাকা ছাড়া তৃণমূলে কিছু হয় না। এভাবে তৃণমূল একদিন শেষ হয়ে যাবে।


প্রসঙ্গত ২৫ আসন বিশিষ্ট তুলসীহাটা অঞ্চলে মাত্র সাতটি আসনে জেতে তৃণমূল। কংগ্রেস এবং বিজেপিকে সাথে নিয়ে পঞ্চায়েত দখল করেছে সিপিআইএম।পঞ্চায়েত হাত ছাড়া হওয়ার ধাক্কা দলের অনেকে মেনে নিতে পারছেন না।তারপর থেকে কার্যত একের পর এক অভিযোগ সামনে আসছে।এত কিছুর পরেও এবার কি পদ হারাবেন ব্লক সভাপতি মানিক দাস। রাজনৈতিক মহলে এখন এটাই প্রশ্ন। তবে সূত্রের খবর এই মুহূর্তে আসন টলমলে ব্লক সভাপতির।

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad

Top Side