মালদা;তনুজ জৈন;০৭নভেম্বর: স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন। দুই ছেলে প্রতিবন্ধী। এলাকায় চলত রমরমিয়ে জুয়ার ঠেক। সারাদিনে টোটো চালিয়ে যা রোজগার হতো। সেই টাকাতে লোভের বশে জুয়া খেলে হারিয়ে ছিল সর্বস্ব। তারপর মানসিক অবসাদে অত্যাধিক মদ্যপানের জেরে এক বছর আগে মৃত্যু হয়েছে। এখনো ভাতা পান না অসহায় প্রতিবন্ধী দুই ছেলে। এদিকে তৃণমূল নেতার ক্লাবের জুয়ার ঠেকে পুলিশের হানার পর থানার সামনে তৃণমূলের বিক্ষোভের ঘটনায় সুর চরালো মৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকেরা। পরিবারের লোকের দাবি পুলিশ যদি সঠিক সময়ে এই সব জুয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিত। তাহলে তাদের ছেলের এই নির্মম পরিণতি হতো না। সাথে তাদের অভিযোগ এই ধরনের অবৈধ কাজকর্মে মদত থাকে তৃণমূলের। অনেক সময় সাথ দেয় পুলিশ। পরিবারের এই অভিযোগের পর তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ বিজেপির। সাফাই তৃণমূলের। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা পান্ডব দাস। প্রায় এক বছর আগে যিনি মারা যান। মারা যাওয়ার কারণ অত্যধিক মদ্যপান। টোটো চালক পাণ্ডব প্রথমে জুয়ার নেশায় আসক্ত হন। পরবর্তীতে সব হারিয়ে মদ্যপান করে তার মৃত্যু হয়। পান্ডবের স্ত্রী অপি দাস মানসিক ভারসাম্যহীন। দুই ছেলে প্রতিবন্ধী। কিন্তু তারা এখনো ভাতা পাচ্ছেন না। এদিকে গতকাল বুধবার রাতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়। যার কারণ ছিল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বাবলু কর্মকারের ক্লাবের জুয়ার ঠেকে পুলিশের হানা দেওয়া। যদিও থানা ঘেরাও কর্মসূচি তৃণমূলের ছিল না বলে সংবাদ মাধ্যমের সামনে সাফাই দেয় নেতৃত্ব। এদিকে এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার পান্ডব দাসের দাদা বৌদি জুয়া এবং অবৈধ মদের ঠেক নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। তারা বলেন এগুলো চলত কিন্তু পুলিশ আটকাতো না। তৃণমূল নেতারা যুক্ত থাকত। আগে উচিত এসব বন্ধ করা। আগে বন্ধ হলে পান্ডবকে মারা যেতে হতো না। বিজেপির অভিযোগ রাজ্য জুড়ে এই ভাবে বহু পান্ডব শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর পুলিশ যদি দলদাস হওয়া বন্ধ না করে। কালকের ঘটনা থেকে প্রমাণিত তৃণমূল নেতারা এরপর পুলিশকে রাস্তায় ধরে মারবে। যদিও তৃণমূলের দাবি তারা পাণ্ডবের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। তার ছেলেদের ভাতা করে দেওয়ার জন্য কাগজ জমা নিয়েছে। তৃণমূল কোন থানা ঘেরাও তে ছিল না। সব বিজেপির চক্রান্ত।
পান্ডব দাসের বৌদি হেমা দাস বলেন, এবার থেকে এসব বন্ধ হোক। আমার দেওরের মত কেউ যাতে না হারায়। এটাই আমার অনুরোধ।
দাদা সন্তোষ দাসের অভিযোগ, এখানে তো তৃণমূলের সবকিছু। তারা যদি না চাইতো তবে কি এসব হতো। এবার এসব বন্ধ হোক। সকলে সতর্ক হোক।
যুব তৃণমূল নেতা পূজন দাসের দাবি, পান্ডব দাসের মৃত্যুর ঘটনা অনেক দিনের। অতিরিক্ত মদ্যপান কারণ ছিল। সেই সময় পরিবারের পাশে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম। তার ছেলেদের ভাতা চালু করার জন্য কাগজ জমা নিয়েছি। বিজেপির কোন কাজ নেই শুধু চক্রান্ত।
বিজেপি নেতা রুপেশ আগরওয়ালের কটাক্ষ, এরকম অনেক পান্ডব রাজ্য জুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। জুয়া খেলে খেলে। পকেট ভরছে তৃণমূল নেতাদের। পুলিশ এবার দলদাস হওয়া বন্ধ করুক। না তো এরপর পুলিশকে রাস্তায় ধরে তৃণমূল নেতারা মেরে দেবে।