মালদা;তনুজ জৈন;০৪অক্টোবর: জমিদারের হাতে শুরু ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষ প্রাচীন দুর্গাপুজো। এখন নেই জমিদার নেই জমিদারিও। জমিদারের তৈরি দুর্গা মন্দির কবেই ফুলহারের গর্ভে তলিয়ে গেছে। কিন্তু রীতি এবং রেওয়াজ মেনে পুজো আজও বন্ধ নেই। কালের নিয়মে সেই পুজো এখন কার্যত সার্বজনীন মেজাজে। জমিদারের চালু করা পুজোর দায়িত্ব নিয়ে নিয়েছেন স্থানীয়রা। তারাই চাঁদা তুলে করছেন পুজোর আয়োজন।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ভালুকার মিশ্র জমিদার বাড়ির পুজো।আজ থেকে প্রায় ১৩১ বছর আগে যে পুজোর সূচনা করে ছিলেন ধর্মপ্রাণ জমিদার হরিমহন মিশ্র। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ভালুকা এবং অধুনা বিহারের আজিমগঞ্জ, বারসই, মনিহারী সহ বেশ কয়েকটি এলাকা তার জমিদারির অন্তর্গত ছিল।ভালুকা তে ফুলহার নদীর ধারে প্রায় দুই শত বিঘা জমির উপরে তিনি নির্মাণ করে ছিলেন সুবিশাল দুর্গা মন্দির। পুজো উপলক্ষে করতেন এলাহী আয়োজন। আমন্ত্রণ থাকতো ব্রিটিশ সাহেবদের। ঘোড়ায় চড়ে আসতো তারা। বসতো নাচগান এবং যাত্রাপালার আসর। প্রজাদের জন্য থাকতো নরনারায়ন সেবা এবং নতুন জামা কাপড়। কিন্তু সেই জমিদারি আর নেই।
১৯৬৪ সালে ফুলহারের গর্ভে তলিয়ে যায় দুর্গা মন্দিরও। তবে এলাকার মানুষ ভুলে যাননি তাদের জমিদারকে। পরবর্তীতে পূজা স্থানান্তরিত হয় ভালুকা বাজারে। সেখানে এলাকার মানুষ পুজো কমিটি তৈরি করেন। এই পুজো এখন কার্যত সার্বজনীন। প্রত্যেকে দায়িত্ব নিয়ে চাঁদা তুলে পূজা পরিচালনা করছেন। এই বছর পূজোর থিম পরিবেশ রক্ষা। নিয়ম মেনে বস্ত্র দান এবং নরনারায়ণ সেবা হবে। শুধু বাজেটের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে যাত্রাপালা। এই মুহূর্তে উদ্যোক্তাদের মধ্যে চরম ব্যস্ততা। জমিদারের পূজোর সার্বজনীন রূপে উৎসবের মেজাজ ভালুকা জুড়ে।