সুশোভন সিংহ :- সবকিছু মিটেও যেন মিটচ্ছে না কিছু, ছাত্র আন্দোলনের জেরবার বাংলাদেশ। অচল হয়ে গেছে দেশটির অর্থনৈতিক পরিকাঠামো। দীর্ঘ তিন মাস ধরে চলা ছাত্র আন্দোলনে কত সপ্তাহে কিছুটা ভাটা পড়লেও, জামাতকে দেশ থেকে নিষিদ্ধ করার পরেই ছাত্র আন্দোলন আবার মাথা চারা দেয় বাংলাদেশ। দেশটির রাজধানীতে লাখো লাখো বিক্ষোভকারীরা জমায়েত হতে শুরু করেছে। কারফিউর মধ্যেই লং-মার্চের ডাক দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। দেশটির গণমাধ্যমের খবর অনুসারে ছাত্র আন্দোলনের জেরে অফিস-কাছাড়ির পাশাপাশি বাংলাদেশে কারখানাও বন্ধ। পাশাপাশি সাড়ে তিন হাজারের বেশি বস্ত্র কারখানা বন্ধ রয়েছে। দেশের অর্থনীতির দিক থেকে যেগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হচ্ছে।সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সোমবার সকালে লং মার্চে যোগ দিতে ঢাকা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন কিছু ছাত্রছাত্রী। তাঁদের সরাতে কাঁদানে গ্যাস প্রয়োগ করে পুলিশ। ব্যবহার করা হয়েছে সাউন্ড গ্রেনেডও। দেশটিতে ইন্টারনেট পরিষেবা সম্পূর্ণ বন্ধের নির্দেশ দিল শেখ হাসিনা সরকার। রবিবার পর্যন্ত ফোর জি পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। মোবাইলের ইন্টারনেট চলছিল না। তবে ব্রডব্যান্ড পরিষেবা চালু ছিল। সোমবার তা-ও বন্ধ করে দেওয়া হল। আন্দোলনকারীদের অভিমুখ কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। কোটার সংস্করণ চেয়ে আন্দোলন এখন যেন হাসিনা বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন প্রান্তরে বাংলাদেশের জাতীয় পিতার ছবিকে বিকৃত করা হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের দ্বারা। জাতীয় পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তি গুলোকে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
ক্রমশ দিয়ে আন্দোলন আগুনের লেলিহান শিখার মত ছড়িয়ে পড়ছে দেশটিতে। বাংলাদেশের জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টো নাগাদ নিজের বক্তব্য জানাবেন তিনি। তার আগে পর্যন্ত জনগণকে ধৈর্য ধরে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করেছেন। ছাত্র আন্দোলন সামাল দিতে রবিবারই কার্ফু ঘোষণা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্ফু জারি করেছিল দেশ জুড়ে। অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্ফু চলছে। সোমবার থেকে তিন দিনের ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাঝে আন্দোলনকারীদের লং মার্চের ডাক নতুন করে অশান্তির জন্ম দিতে পারে। সোমবার সকালে ঢাকার রাস্তা ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়তেই আন্দোলনকারীদের জমায়েত বাড়তে শুরু করে।